দেশে ইতিহাস গড়েছে রেমিট্যান্স

বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়ের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের রোববার (৬ এপ্রিল) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিটি ডলার গড়ে ১২২ টাকা ধরে এ রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। রেকর্ড গড়া এ রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের সহায়তা দেবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পেছনে ফেলে গেলো ডিসেম্বরকেও
এর আগে, একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে, যেদিন প্রবাসীরা ২৬৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। মার্চের ৩১ দিনে সে রেকর্ড অতিক্রম করে ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ।
অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসেই ৪০০ কোটি ডলার বেশি আয়
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই–ফেব্রুয়ারি) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের বেশি, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০০ কোটি ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ (২০২৪ ও ২০২৩)
মাস ২০২৫ সালের রেমিট্যান্স (কোটি ডলার) ২০২৪ সালের রেমিট্যান্স (কোটি ডলার)
জানুয়ারি ২১৯ ২১১.৩১
ফেব্রুয়ারি ২৫২.৮০ ২১৬.৪৫
মার্চ ৩২৯ (রেকর্ড) ১৯৯.৭০
এপ্রিল — ২০৪.৪২
মে — ২২৫.৪৯
জুন — ২৫৩.৮৬
জুলাই — ১৯১.৩৭
আগস্ট — ২২২.৪১
সেপ্টেম্বর — ২৪০.৪৭
অক্টোবর — ২৩৯.৫০
নভেম্বর — ২১৯.৯৫
ডিসেম্বর — ২৬৩.৮৭
বিশেষজ্ঞদের মতামত
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রবাসীদের অস্থা, রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ে, যা মার্চে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। একই সঙ্গে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্ন প্রণোদনাও এ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপমুক্ত হবে এবং টাকার বিনিময় হারও কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।
সবার দেশ/কেএম