Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ২৫ মার্চ ২০২৫

আওয়ামী এ নেতা এখন নাম ভাঙ্গাচ্ছে বিএনপির

কাফরুল-ভাষানটেকের চাঁদাবাজ সম্রাট জাকির

কাফরুল-ভাষানটেকের চাঁদাবাজ সম্রাট জাকির
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কাফরুল ও ভাষানটেক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে জাকির হোসেন শান্ত (৩৭)। 

নামে শান্ত হলেও অশান্ত এ ধূর্ত জাকির পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডে, তিনি খলিলুর রহমান সিপাহীর ছেলে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জাকির হোসেন শান্ত বিভিন্ন দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণকাজের ঠিকাদারদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছেন। কেউ তার দাবিকৃত অর্থ দিতে অস্বীকার করলে তিনি ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।

ভাষানটেক এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, সে প্রায়ই এসে আমাদের দোকানে চাঁদা চায়। টাকা না দিলে মারধর এবং ভাঙচুরের হুমকি দেয়। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।

এলাকাবাসীরা আরও জানান, জাকির হোসেন শান্ত নিজের রাজনৈতিক পরিচয় বদলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এক সময় তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা বলে পরিচয় দিতেন, এখন আবার বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তার এ পরিচয় বদলের কৌশলের কারণে প্রশাসনও বিভ্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত জাকির হোসেন শান্তর বিরুদ্ধে অতীতেও  রয়েছে একাধিক মামলা। ২০১৬ সালে কাফরুল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(৪)(অ) এবং পেনাল কোডের ৩২৩/৩৮০ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৮ সালের ৫ জুলাই ভাষানটেক থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এর ১৯(১)-এর ৯(খ)/২৫ ধারায় মামলা হয়।

তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে। তিনি নিয়মিত সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত এবং এলাকাবাসীর শান্তি বিনষ্ট করছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশের হাতে একাধিকবার আটক হলেও আইনের ফাঁকফোকর গলে তিনি বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। ফলে তিনি আবারও চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের কাজে লিপ্ত হন।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ একজোট হয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। তারা দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভাষানটেকের এক বাসিন্দা বলেন, জাকির হোসেন শান্তর কারণে আমাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সে দিন দিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

স্থানীয়রা কাফরুল ও ভাষানটেক থানা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন। তারা চান, প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে এবং এলাকাকে চাঁদাবাজ ও অপরাধমুক্ত করবে।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করে এই অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুক। নইলে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে পারব না। সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কাফরুল ও ভাষানটেক থানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তবে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এলাকাবাসী এখন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আশায় আছেন যে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং কাফরুল ও ভাষানটেক এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তারা আশা করছেন, খুব শিগগিরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবে।

সবার দেশ/এমকেজে

সম্পর্কিত বিষয়: