Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ স্টাফ রিপোর্টার  

প্রকাশিত: ১৭:১১, ১৮ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ২৩:৩৮, ১৮ মার্চ ২০২৫

আইনি সেবা না দিতে নারী আইনজীবীকে হুমকি

আইনি সেবা না দিতে নারী আইনজীবীকে হুমকি
ছবি: সবার দেশ (অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম)

পেশাগত দায়িত্ব পালন না করতে হুমকি দেয়া হয়েছে সুপ্রিমকোর্ট বারের এক নারী আইনজীবীকে। 

বিবাদীপক্ষের লেলিয়ে দেয়া  একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রথম  সুপ্রিমকোর্ট বারের চেম্বারে প্রবেশ করে। পরে কথা বলার ছুতোয় গোপনে তার কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করে। নিজেদের ‘সংবাদকর্মী’ পরিচয় দিয়ে তাকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। পরে আইনজীবীর সে প্রশ্নোত্তরের ডিভিও কেটে- ছেটে নিজেদের সুবিধামাফিক অংশ জোড়া দিয়ে তৈরিকৃত প্রতিবেদন ‘দেশ টিভি’তে অন-এয়ার করে। 

অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম নামক এ আইনজীবীকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয় কথিত ওই প্রতিবেদনে। তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। ক্লায়েন্টের পক্ষত্যাগ করার জন্য বিবাদীপক্ষের ভাড়াটে চক্রটি হুমকি-ধামকি প্রদান করে। 

অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম জানান, তিনি দেশ টেলিভিশন লি:’র পরিচালক মো: সাদেক হোসেন চৌধুরীর ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ হাসানের আইনজীবী। সম্প্রতি তিনি ক্লায়েন্টের পক্ষে গত ৬ মার্চ  ‘এশিয়াটিক মাইন্ড শেয়ার লি:’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদ আলমকে একটি লিগ্যাল নোটিশ দেন। এর পরপরই গত ১১ মার্চ একটি  অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ‘সংবাদকর্মী’ পরিচয় দিয়ে সাগরিকার সাক্ষাৎ চায়।  তিনি তাদের সুপ্রিমকোর্ট বার ভবনের শেরে-ই-বাংলা ভবনস্থ ১০১ নম্বর আমার কক্ষে আসতে বলেন। 

কক্ষে প্রবেশকারীদেরকে তিনি আগে কখনো দেখেন নি। সামনে এসেই তারা জানতে চান, সাগরিকা কিভাবে সাদেক হোসেন চৌধুরীর আইনজীবী নিযুক্ত হলেন ? তিনিতো দেশের বাইরে। আরিফ হাসানও কারাগারে। তিনি কিভাবে তাদের আইনজীবী নিযুক্ত হলেন। 

সাগরিকা তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে যথাসম্ভব বিনয়ের সঙ্গে তাদের প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, আমি কি করে মক্কেললের আইনজীবী নিযুক্ত হলাম সে কফৈয়ত কাউকে দিতে  বাধ্য নই। এ কথা শুনে উত্তেজিত প্রশ্নকারীরা সাগরিকাকে আপত্তিকর ভাষায় প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে থাকেন। সাগরিকাকে উত্তেজিত করার চেষ্টা চালান। হেনস্তা করেন। কিন্তু অত্যন্ত ধৈর্য্যরে সঙ্গে সাগরিকা তাদের প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দেন। পরে দেখা যায় গোপনে ধারণ করা তার কথোপকথনের ভিডিওটি কাট-ছাট করে ওইদিনই ইচ্ছেমতো ‘নিউজ’ বানিয়ে দেশ টিভিতে সম্প্রচার করে। 

সাগরিকা বলেন, আমাকে না জানিয়ে ভিডিও ধারণ করা ফৌজদারি অপরাধ। আমি একজন পেশাদার আইনজীবী। আমাকে অবহিত না করে, আমার আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না নিয়ে সেটি প্রচার করে দুষ্কৃতকারীরা ‘সাইবার অপরাধ’ করেছেন। বিষয়টি আমি সুপ্রিমকোর্ট বারকে জানিয়েছি। সুপ্রিমকোর্টে কর্মরত সাংবাদিক সংগঠনকে জানিয়েছি। ওই ভিডিও ক্লিপ প্রত্যাহার না করলে এখন আমি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

এর আগে সুপ্রিমকোর্ট বারে দেয়া আবেদনে অ্যাডভোকেট সাগরিকা ইসলাম ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে বলেন, গত ১১ মার্চ সকাল ১১টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট বারে আমার ১০১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলাম। এ সময় ‘দেশ টিভি সাংবাদিক’ পরিচয়ে ২ জন পুরুষ, একজন নারী-আজিম, মো: মান্না ও সাবরিনা আমার সামনে বসেন। আমার সঙ্গে কথোপকথনের সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে চলে যায়। 

এরপর দুপুর  ১টা ৩ মিনিটে একটি মোবাইল নম্বর থেকে আজিম নামের ব্যক্তি ফোনে আমাকে এ মর্মে হুমকি দেন যে, আমি যেন দেশটিভি’র কারো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে আইনি সহায়তা না দিই। সহায়তা করলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং আমাকে দেখে নেবেন মর্মে হুমকি দেন। 

এর কিছুক্ষণ পরই গোপনে ধারণকৃত আমার কথাবার্তাকে কাটা- ছেঁড়া ও এডিট করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে  দেশটিভিতে একটি প্রতিবেদন অন-এয়ার করে। তারা আমার অজ্ঞাতসারে ভিডিও ধারণ করেছে। প্রচার করেছে।  আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেছে। যা তথ্য-প্রযুক্তি আইনসহ ফৌজদারি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবেদনে তিনি একজন নারী আইনজীবী হিসেবে  নির্বিঘ্নে, নিরাপদে আইন পেশা পরিচালনা করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

সবার দেশ/কেএম