গুলশানের গদি থেকে গোয়েন্দার গদি – রূপকথার পতন
বদনা থেকে বেদনা: সাবেক এমপি মোরশেদ ধরা

নিশ্ছিদ্র রাজনীতির জাদুকর, পতিত আওয়ামী লীগের তিনবারের নিশিভোটের এমপি, শতভাগ বিজয়ী, মিডিয়ার মোগল, আর জনগণের মুখে মুখে ‘বদনা ভাই’ খ্যাত সাবেক এমপি মোরশেদ আলম— অবশেষে তার বহুল চর্চিত ‘দুর্নীতির গ্রিনপাস’ হারিয়ে ফেললেন। এবার গুলশানের বিলাসবহুলতা থেকে সরাসরি ডিবির ডিটেইন রুমে!
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে গুলশানের প্রাসাদোপম ঠিকানা থেকে ডিবি অফিসে ‘চিরচেনা আতিথেয়তা’ উপভোগ করতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
২০১৪, ২০১৮, ২০২৪— তিন নির্বাচনে হ্যাট্রিক জয়! কোনো বিরোধী নাই, অপশক্তি নাই, শুধু ‘উন্নয়ন আর উন্নয়ন।’ তবে এ উন্নয়ন কোথায় হতো, সেটা জানা গেল পরে—বিএনপির কার্যালয়, বিরোধী কর্মীর দোকান, এবং জনগণের ধৈর্যের সীমায়।
ডিবি পুলিশ জানাচ্ছে—সেনবাগে বিএনপি অফিসে ভাঙচুর, বাড়িতে হামলা, দোকান লুট এমনকি রাজনৈতিক ‘ডিকরেটিং সার্ভিস’ চালাতে গিয়েই তিন তিনটা মামলায় জড়ালেন ‘বদনা ভাই’। আর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে—সোজা গুলশানের ঝাঁ চকচকে বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে আসে ডিবির বাহিনী।
ডিবির গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা র্যাডার অন করি, লোকেশন ট্র্যাক করি, এবং অবশেষে ‘বদনা ভাই’কে বোতলজাত করে থানায় জমা দিই। তাদের ভাষায়, উনি পালানোর চেষ্টাও করেননি। শুধু বলছিলেন—‘বুঝিনি, আমার টাইম শেষ হইছে!’
২০১৮ সালের সে ‘কার্যালয় কাঁপানো অভিযান’, গত বছরের ‘দোকান পুনর্বিন্যাস প্রকল্প’, আর অসংখ্য অভিযোগ-গুজব—সব মিলিয়ে এ সাবেক এমপি হয়ে ওঠেন আইনের জন্য এক ‘ওভারডিউ’ কেস স্টাডি’।
দখল করা বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও নিজস্ব নিউজ চ্যানেলও আর নিজেকে রক্ষা করতে পারলো না। জনগণ বলছে, ‘ক্যামেরা উনার, তবে এবার ক্যামেরা তাক করলো উনার দিকেই।’
নোয়াখালীর এক দোকানি বলেন, ভাই, আমগো দোকান ভাঙছিলো, এখন উনার চেয়ারটাই ভাঙতেছে! অন্য এক তরুণের মন্তব্য, উনি এমপি ছিলেন ঠিকই, কিন্তু আচরণে ছিলেন যেন এমপির ওপর ‘বদনা কমিশনার।’
গোল্ডেন এমপি থেকে সাসপেন্ডেড প্লাস্টিকের বদনা— এ যাত্রা এক রাজনৈতিক রূপকথার খল নায়ক মেটালিক মিকে বন্ধী যেনো পাপের যথার্থ সমাপ্তি। জনগণ এখন খোঁজ নিচ্ছে, আর কে কে আছেন ‘ডিবি ডেস্টিনেশনে’ যাওয়ার লাইনে?
সবার দেশ/কেএম