বরিশালে বাস শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
নিরাপত্তার দাবীতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনালের বাস শ্রমিকরা। এতে বন্ধ হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ টি রুটের বাস চলাচল। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরেছে সাধারণ যাত্রীরা।
বুধবার সকাল ৬ টা থেকে কর্মবিরতি শুরু হয় রূপাতলী বাস টার্মিনালে। শ্রমিকদের অভিযোগ, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে হাফ ভাড়া নিয়ে ছাত্ররা বিরোধ বাজিয়ে তাদের রূপাতলীর শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস কার্যালয় ও তাওহিদ পরিবহনসহ কয়েকটি বাস ভাংচুর করেছে। শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়েই লাঞ্ছিতের অভিযোগ তুলে যান-মালের নিরাপত্তা চেয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি শুরু হওয়া রুটগুলো হলো বরিশাল-খুলনা, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, ভান্ডারিয়া, ঝালকাঠি, নলছিটি, বেতাগী, বরগুনা, লেবুখালি, বাউফল, দশমিনা, পটুয়াখালি, আমতলী ও কুয়াকাটা।
এসব রুটের ৮টি মালিক সমিতি শ্রমিকদের কর্মবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করেছে বলে জানিয়েছে বরিশালের শ্রমিক নেতারা। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২ টার দিকে শ্রমিকেরা এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এর আগে বিকেলে বিএম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী বরিশাল ঝালকাঠি সড়ক পথে একটি বাসের হেলপারকে হাফ ভাড়া নিতে বললে চালকের সহযোগী হাফ ভাড়া না নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
খবর পেয়ে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা টার্মিনালে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় কয়েক দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়, বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে শ্রমিকদের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ টি রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরে সাধারণ যাত্রীরা। বাস চলাচল না করায় যাত্রীরা থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা), সিএনজি, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে করে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন রয়েছে ঝুঁকি অন্যদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বরগুনাগামী যাত্রী মো. শাহজাহান মিয়া জনান, সকালে পরিবার নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে রূপাতলী আসি কিন্তু এসে দেখি গাড়ি চলছে না শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছে। প্রায়ই এ রুটে মালিক, শ্রমিক, শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায়ই ঝামেলা হয় কোনো না কোন বিষয় নিয়ে। আর এর ফলে ভোগান্তিতে পরতে হয় আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবার নিয়ে এখন সিএনজিতে করে বরগুনা যাচ্ছি।
শ্রমিকরা জানান, কথায় কথায় আমাদের উপর হামলা চালানো হয়, গাড়ি ভাংচুর করা হয় আমাদের কোনও নিরাপত্তা নাই। শুধু তাই নয় বেশ কয়েকবার আমাদের শ্রমিক অফিস ভাংচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকালও আমাদের অফিস ভাংচুর করে তারা। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই, নিরাপত্তা চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হবে এ কর্মবিরতি চলবে বলে জানান শ্রমিকরা।
সবার দেশ/এমকেজে