Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ১৫ মার্চ ২০২৫

সংস্কারের ৬ মাসেই বেহাল দশা মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কের

লুটপাটের মহাসড়কে মুখ থুবড়ে উন্নয়ন

লুটপাটের মহাসড়কে মুখ থুবড়ে উন্নয়ন
ছবি: সংগৃহীত

বিগত ১৬ বছর শুধু উন্নয়নের মহাসড়কের কথা শুনেছি। লুটপাটের তান্ডবকে তথাকথিত উন্নয়নের হালকা প্রলেপ দিয়ে যে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে জনগণকে ভুলভাল শোনানো হয়েছে, তার ছাল বাকল ওঠে আজ দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

নারায়নগঞ্জে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা মদনপুর- মদনগঞ্জ সড়কটি মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই বেহাল হয়ে পড়েছে। ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে  সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পিচ ওঠে গিয়ে যান চলাচলে তৈরি হয়েছে দুর্ভোগ। প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে, আহত হচ্ছে যাত্রীরা। সে কারণে প্রায় সময়ই লেগে থাকছে দীর্ঘ জ্যাম।

স্থানীয়রা জানান, এ সড়কটি সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার জন্য উপযুক্ত ছিলো। তবে, ২০২২ সালে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু চালুর পর এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ, এ সড়ক ব্যবহার করলে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতে প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ কমে যায়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ সংস্কারের ছয় মাসের মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল, গর্ত ও পিচ ওঠে গেছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়ম ও সড়তের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ লুটপাটই সড়কের ক্ষতির জন্য দায়ী।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হওয়া বাগবাড়ি এলাকার মো. শাওন বলেন, সন্ধ্যার পর সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়। প্রায়ই গাড়ি উল্টে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বাচ্চু মিয়া বলেন, দিন-রাত প্রচুর ভারী ট্রাক ও লরি চলে। রাস্তা এত ওজন সহ্য করতে না পেরে বসে গেছে, অনেক জায়গায় গর্ত হয়েছে। ফলে প্রায়ই গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়।

সওজ কর্মকর্তারা জানান, অতিরিক্ত ওজনের পণ্যবোঝাই ট্রাক ও লরির কারণে সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে আশেপাশের সিমেন্ট কারখানার ভারী যানবাহনগুলো মোক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়কের নির্মাণকাজ চলার কারণে বিকল্প হিসেবে মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়ক ব্যবহার করছে। সিমেন্ট কারখানা ছাড়াও অন্য যানবাহনগুলোতে ওজনসীমার অতিরিক্ত পণ্য বহন করছে। অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালালেও পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ করতে পরিবহন মালিক ও সিমেন্ট কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছিলো, তবে কোনো ফল হয়নি।

সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে এ সড়ক ব্যবহার করছেন। 

শাহ সিমেন্টের একজন কর্মকর্তা বলেন, পঞ্চবটি-মোক্তারপুর সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হলে আমরা এ সড়ক ব্যবহার করবো না।

এ বিষয়ে সওজের নারায়ণগঞ্জ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, সড়কটির বেহাল দশা নিয়ে আমরাও চিন্তিত। ওভারলোডেড গাড়ির চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমরা অন্তর্বর্তী সংস্কারের চিন্তা করছি, তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।

তিনি আরও জানান, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ বাড়ায় ছয় লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিলো, তবে নতুন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সবার দেশ/কেএম