বেয়াইনকে ‘ধর্ষণচেষ্টা’, চোখ উৎপাটনে বেয়াইয়ের মৃত্যু

যশোরের পল্লীতে বেয়াইনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মারধর ও চোখ উৎপাটনে সিরাজুল ইসলাম কুটি (৪৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে দুপুরে যশোর সদরের বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সিরাজুল ইসলাম কুটি যশোর শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত হাসি বেগম সম্পর্কে সিরাজুল ইসলাম কুটির বেয়াইন। তিনি হাসি বেগমের মেঝ মেয়ের শ্বশুর। এ ঘটনায় বেয়াইন হাসি বেগমকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে সিরাজুল তার বেয়াইন হাসি বেগমের বাড়িতে যান। এরপর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশীরা সেখানে গিয়ে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করছেন। এর মধ্যে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত ছিল। এ ছাড়া হাসির শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখা যায়।
পরে স্থানীয়রা সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। আর হাসি বেগম নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
এ দিকে, সিরাজুল ও তার স্বজনরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হাসি বেগম, তার মেয়ে মনিকা এবং তার আরেক জামাতা মনিরুল সিরাজুলকে শাবল দিয়ে মারধর করেন। এ ছাড়া চোখেও গুরুতর জখম করেন।
অন্যদিকে, হাসি বেগমের অভিযোগ, সিরাজুল দীর্ঘদিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। এ সময় তিনি আত্মরক্ষা করতে গেলে তার হাত সিরাজুলের চোখে লাগে। এ ছাড়া তাকেও মারধর করা হয়েছে বলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিমাদ্রী শেখর সরকার জানান, আহতের দুটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে; যা এখানে সেবা দেয়া সম্ভব না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ দিকে সিরাজুল ইসলামের ছোট ভাই মফিজুল ইসলাম ইমন জানান, তার ভাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার (৩০ মার্চ) সকালে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মূল ঘটনা সাংবাদিকদের জানানো হবে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কী কারণে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ সেই বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে হাসি বেগমকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ওসি।
সবার দেশ/কেএম