কারামুক্তি মানেই করতালি নয়, টের পেলেন সিরাজগঞ্জের আজিজ
জামিনে কারামুক্ত সাবেক এমপিকে গণধোলাই, আর কেউ কী চাইবে জামিনে মুক্তি?

সিরাজগঞ্জ শহরের আকাশে তখনও পূর্ণিমার আলো ঝলমল করছে না, কিন্তু বড় পুল এলাকায় বোধহয় বজ্রপাত ঘটে গেছে। কারণ, সেদিন সন্ধ্যায় এক অতি দুর্লভ প্রাণীর দেখা মেলে—জেলফেরত এক সাবেক এমপি! জামিনে মুক্তির পর তিনি হয়তো ভাবছিলেন, ভক্তরা নিশ্চয়ই ফুল দিয়ে বরণ করবে! কিন্তু আফসোস! তার ভাগ্যে ছিল জুতার মালা, গণধোলাইয়ের পালা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে, সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের গেট দিয়ে সদ্য বের হওয়া এ ‘জননন্দিত’ (!) নেতার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও জনতা। তারা ফুল নয়, বরং কলার চেপে ধরা প্রস্তুত রেখেছিলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক শার্টের কলার ধরে এমনভাবে গাড়িতে তুলতে চাইছেন, যেন ভুল করে হোটেলের বয়েকে নেতা বানিয়ে ফেলা হয়েছে! কেউ কেউ আবার ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে হুঙ্কার ছুঁড়ছেন, যেন এ যুগের আলিফ লায়লার রাজনীতি চলছে। আর ফেসবুক লাইভে ছাত্রনেতা মুনতাসির ঘোষণা দিলেন—এই লোকরে বেঁধে প্রকাশ্যে কথা বলাইমু! মানে নেতাকে বানানো হবে লাইভ টক শো-এর মঞ্চ, কিন্তু মঞ্চটি হবে বাঁশের খুঁটি আর মোটা রশিতে বাঁধা।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির পরে সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রজনতা সাবেক এমপিকে ঘিরে ধরে। এখন তিনি আমাদের হেফাজতে আছেন। তবে এ হেফাজতের ধরনটা ঠিক জেল থেকে কতটা ভিন্ন, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
তবে সাবেক এমপি আজিজ নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন—দুর্নীতির মামলায় জামিন মানেই এখন আর ‘মুক্তি’ নয়, বরং নতুন এক ইনিংসের শুরু—যার প্রথম বলই হতে পারে ‘গণধোলাই’ নামে পরিচিত নাগরিক কুস্তি।
সবার দেশ/কেএম