ট্রেন থামিয়ে তেল চুরি, চালকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোড্ডা এলাকায় একটি কনটেইনার ট্রেন থামিয়ে ইঞ্জিন থেকে তেল চুরির অভিযোগে ট্রেনচালক, গার্ডসহ রেলওয়ের অন্তত আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে রেলওয়ে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২১০ লিটার ডিজেল তেল ও চুরির কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন রেলের চালক, সহকারী চালক, গার্ডসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি।
এ ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শোভন কুমার দাশ গত ৮ এপ্রিল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে আটজনের, পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মো. নাসির উদ্দিন – ট্রেনচালক, আব্দুর রাজ্জাক – সহকারী চালক, মো. ওমর ফারুক – ট্রেন পরিচালক (গার্ড), পারভেজ ওরফে জাফর (৩১) কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা কাজী রতন (৪৫), মুরাদ মিয়া (২৮), ইসহাক মিয়া (৩০) এবং শামীম মিয়া (৪৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা এলাকায় ইঞ্জিন থামিয়ে তেল চুরির ঘটনা ছিলো ‘ওপেন সিক্রেট’। ৭ এপ্রিল রাত সোয়া ১২টার দিকে কনটেইনার ট্রেনটি ওই এলাকায় পৌঁছালে অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দিয়ে ইঞ্জিন থেকে তেল নামানো হচ্ছিলো।
পুলিশের অভিযোগে বলা হয়, সবুজ সংকেত থাকা সত্ত্বেও ট্রেনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে থামানো হয়। এরপর তেল চুরি শুরু হলে রেলওয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চালক ট্রেন চালিয়ে দেন। পুলিশ সংকেত দিলেও ট্রেনটি থামানো হয়নি। অভিযানকালে একটি বড় ড্রামে ২০০ লিটার এবং ছোট ড্রামে ১০ লিটার তেল উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি বড় পাতিল ও একটি বাঁশ জব্দ করা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ট্রেনচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, লালবাতি থাকায় ট্রেন থামানো হয়। পরে সবুজ সংকেত পেয়ে ট্রেন চালানো হয়। তেল চুরির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ঘটনায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলের সহকারী কমান্ড্যান্ট মো. ফিরোজ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন থামিয়ে ইঞ্জিন থেকে তেল চুরি করে আসছিলো। অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে ২১০ লিটার তেল উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সবার দেশ/কেএম