নববর্ষের শোভাযাত্রায়
ডিসি-এসপির সঙ্গে হত্যা মামলার আসামী আ’লীগ নেতা

কুষ্টিয়ায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেমের উপস্থিতি তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে শুরু হওয়া এ শোভাযাত্রায় তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে সামনের সারিতে ব্যানার ধরে অংশ নেন। ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় রাজনৈতিক ও সাধারণ মহলে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।
মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম কুষ্টিয়া পৌর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কুষ্টিয়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছিলেন। ৫ আগস্ট কোটাবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তামজিদ হোসেন জনি নামে এক যুবককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তিনি ৪২ নম্বর আসামি। এ মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদরের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। মামলায় ৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০-৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। আন্দোলনের পর মোকারম দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।
শোভাযাত্রায় তার উপস্থিতির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সুলতান মারুফ তালহা বলেন, যারা ফ্যাসিস্টদের সহযোগীদের নিয়ে পথ চলবে, তারা নিন্দনীয়। সে ডিসি হোক, বিএনপি হোক বা জামায়াত।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমদ ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, জেলা প্রশাসনের এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত ছিলো। আমি ডিসি ও এসপির সঙ্গে কথা বলবো। ফ্যাসিস্টদের দোসররা কীভাবে প্রশাসনের কর্মসূচিতে অংশ নেয়? বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার কথা জানান।
মোকারম হোসেন প্রথমে মামলার বিষয় অস্বীকার করলেও প্রমাণের কথা শুনে প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং ছবি দিয়ে সংবাদ না প্রকাশের অনুরোধ করেন।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আমি কিছু জানি না। এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, আমি তাকে চিনি না, খেয়ালও করিনি। তিনি মামলার আসামি হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলবো।
এ ঘটনা কুষ্টিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, প্রশাসনের এমন ত্রুটি জনমনে অসন্তোষ বাড়াতে পারে।
সবার দেশ/এমকেজে