মানিকগঞ্জে মানবেন্দ্র ঘোষের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত
ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি তৈরির অভিযোগে চিত্রশিল্পীর বাড়িতে হামলা
মানবেন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি এ ঘটনায় মর্মাহত কিন্তু ভীত নন। তিনি বলেন, আমি একজন শিল্পী, আমার কাজ মানুষের মনে আনন্দ আর চিন্তার জন্ম দেয়া। আমি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করিনি। এ হামলা আমাকে থামাতে পারবে না।

মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ঘোষের বাজার এলাকায় বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে গত রাতে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি নির্মাণের অভিযোগে এ হামলা চালানো হয়েছে।
তবে শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তিনি শুধু বাঘের মুখাকৃতি তৈরি করেছেন, শেখ হাসিনার মুখাকৃতি নয়।
মানবেন্দ্র ঘোষ, যিনি ‘মানব’ নামে মানিকগঞ্জের শিল্পাঙ্গনে পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে তার সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, শিল্পীর কোনো জাত, ধর্ম বা রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে নেই, এবং তার বাড়িতে এমন হামলা শিল্প ও সৃজনশীলতার ওপর সরাসরি আঘাত।
এ ঘটনার পর মানিকগঞ্জের বাসিন্দারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, এটা কেবল মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে হামলা নয়, এটা আমাদের সংস্কৃতি ও শিল্পের প্রতি আক্রমণ। আমরা এর বিচার চাই। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে, এবং অনেকে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। মানিকগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আমরা ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, মানবেন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি এ ঘটনায় মর্মাহত কিন্তু ভীত নন। তিনি বলেন, আমি একজন শিল্পী, আমার কাজ মানুষের মনে আনন্দ আর চিন্তার জন্ম দেয়া। আমি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করিনি। এ হামলা আমাকে থামাতে পারবে না।
মানিকগঞ্জের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এ ঘটনার প্রতিবাদে মানবাধিকার সংগঠন ও শিল্পী সমাজের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি ও শিল্পীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।
পহেলা বৈশাখের মতো একটি সাংস্কৃতিক উৎসবের সময় এমন ঘটনা মানিকগঞ্জবাসীসহ সারা দেশের শিল্পপ্রেমীদের মনে ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে। সবাই প্রত্যাশা করছেন, দ্রুতই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং শিল্পী সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
সবার দেশ/এমকেজে