জাতীয় ঐক্যই আমাদের সুরক্ষার ভ্যানগার্ড
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে এটা জাতির জন্য সুখবর। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে জুলাই বিপ্লবের অংশীদার রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে ১৬ জানুয়ারির বৈঠকে ঘোষণাপত্র তৈরির পক্ষে সবাই একমত হয়েছেন।
যদিও বেশ কিছুদিন থেকেই জুলাই বিপ্লবের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ঘোষণাপত্রের পদ্ধতিগত দিক নিয়ে মতদ্বৈততা চলছিলো। কিন্তু আমাদের জাতীয় অভিভাবক নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে ওই বৈঠকে ঘোষণাপত্রের কাজ এগিয়ে নেয়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পস্টতই বলেন, জুলাই ঘোষণা ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে জুলাই বিপ্লবের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, যে একতা দিয়ে ৫ আগস্ট সৃষ্টি হয়েছিলো ঐক্যব্ধভাবে না করলে এটার অবমাননা হবে।
বৈঠক শেষে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেনো খেয়াল রাখেন যাতে এ ঐক্যে ফাটল না ধরে। তারা বলেন, এ ঐক্য ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ। এটি না হলে পতিত সরকার সুযোগ নেবে।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এ আশংকার সঙ্গত কারণও রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি পতিত ফ্যাসিস্টদের দোসররা আমাদের ক্ষণিক অনৈক্যের সুযোগে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে এসিড টেস্টের মতো নিজেদের জানান দিচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ‘ছাত্রলীগ আবারও ভয়ংকর রূপে ফিরে আসবে, জয় বাংলা’ এসব শ্লোগান সম্বলিত মেসেজের মাধ্যমে।
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসা যাক। বিগত সপ্তাহে আমরা আদালতের বেশ কিছু রায় পেয়েছি, যা ন্যায় বিচারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে। আদালতের আদেশে বেগম খালেদা জিয়া, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ বেশ কয়েকজন অন্যায় সাজা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
বিগত মাফিয়া সরকার নির্লজ্জের মতো নির্দোষদের বিচারের নামে যুগ যুগ অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রেখে নির্যাতন করেছেন, তাদের জীবন নষ্ট করেছেন। নিরপরাধীদের শাস্তি দেয়ার ওই বিচার প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত ছিলো, তাদেরকেও অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের প্রতি যেন বিচারের নামে কোন অন্যায় না করা হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
গেল সপ্তাহে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ছিলো অশান্ত। ঐতিহ্যবাহী ত্যাগী পরিবারের সদস্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর ভারত আশাহত হয়েছে। সেজন্যে সীমান্তে বিএসএফ আমাদের ডিস্টার্ব করতে চেয়েছিলো। কিন্তু তারা ভাবেনি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে হাসিনাবিহীন বাংলাদেশের মানুষ কততা ঐক্যবদ্ধ ও সাহসী। আমাদের গর্বের বিজিবি এবং স্থানীয় জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে বিএসএফ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
অতএব নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় ঐক্যই আমাদের সুরক্ষার একমাত্র ভ্যানগার্ড।
সম্পাদক
১৭ জানুয়ারি ২০২৫