Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ৮ মার্চ ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি 

মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি 
ছবি: সবার দেশ

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।  

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হাতে নেন বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড। ‘ধর্ষক সমাজের ঘুণপোকা, ধর্ষণ হলো ব্যাধি’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘মাগুরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত নরপশুর বিচার চাই’, ‘ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে’, ‘আশ্বাস নয়, আইনের বাস্তবায়ন চাই’— এমন নানা লেখা দেখা যায় তাদের হাতে।  

কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইয়াশিরুল কবীর সৌরভ, গোলাম রাব্বানী, ইসমাইল হোসেন রাহাত, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, সায়েম আহমেদসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৫,০০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো ডকুমেন্টেড। আমরা এসব ঘটনার শাস্তি নিশ্চিত করতে পারছি না, নানা পন্থায় বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। আজ আমরা ন্যায়বিচারের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছি। যদি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করব। 

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে নারীদের অবদানের কারণেই আজ আমরা এখানে দাঁড়াতে পারছি। যখন আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন আমাদের মা-বোনেরা জীবন বাজি রেখে সামনের সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের এ অবদান কখনোই ভুলে যাওয়ার মতো নয়। নারীদের ন্যূনতম হেনস্তারও বিচার করতে হবে এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এ দেশে মা-বোনেরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে না। 

নাহিদ আরও বলেন, যারা ধর্ষণের বিচারে বিলম্ব করছেন, তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো না কোনো নারীর সঙ্গে সংযুক্ত। আমরা যদি এ বিচার নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে আমাদের আশপাশের নারীরাও আক্রান্ত হতে পারে।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাই বিপ্লবে প্রথম সারিতে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল সবচেয়ে বেশি। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম নারী দিবসে আমরা বেদনা-বিধুর সময় পার করছি। মাগুরায় ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে— যা খুবই নিন্দনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের ওপর একের পর এক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, সাইবার বুলিংসহ নানা ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে—এ বিষয়েও আমরা কঠোর অবস্থান ঘোষণা করছি। সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঠাকুরগাঁওয়ের সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনাটিও দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।  

তিনি বলেন, নারীরা আমাদের আন্দোলনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আমরা তাদের জন্যই এখানে দাঁড়িয়েছি। যদি রাষ্ট্র নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জুলাই আন্দোলন বেগতিক হবে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই—দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন এবং নারীদের নিরাপত্তাহীনতা দূর করুন। প্রয়োজনে নারীদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং তাদের স্বাধীনতা, সুশিক্ষা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন।  

তিনি আরও বলেন, মাগুরার ঘটনায় ভুক্তভোগীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা প্রয়োজন হলে তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থাও করা উচিত। অবিলম্বে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা দেশব্যাপী আরও ছড়িয়ে পড়বে। অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতেই হবে।  

সবার দেশ/এনএন