Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সংগীত কুমার, ইবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৪:১২, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ইসলামী শিক্ষার মান

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ইসলামী শিক্ষার মান
ছবি: সবার দেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) দেশের একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যা ইসলামিক বিষয়ের ওপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্ৰী প্রদান করে। আদর্শ জাতি গঠনের লক্ষ্যে ইসলাম ও জাগতিক শিক্ষার সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি বিভাগের মধ্যে অন্তত ৩০টিতে ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সটি পাঠদান করা হচ্ছে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছাড়াই। এতে কোর্সটির গুরুত্ব ও শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের আওতাধীন ৩৬টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ইসলামিক স্টাডিজ নামে নন–ক্রেডিট কার্স রয়েছে। কোর্সটি মূলত বিশেষজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে পড়ানোর কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর এই কোর্সটি শুধু ১ম বর্ষের ১টি সেমিস্টারে রাখা হয়।‌ মূলত এই কোর্স ৪ বছরের অনার্সের সকল সেমিস্টারে রাখার কথা যাতে শিক্ষার্থীরা বিভাগের পড়াশোনার সাথে ইসলাম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা সামান্য ধারণা নিয়ে গ্ৰেজুয়েশন শেষ  করছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থি।

এ বিষয়ে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ উদ্দীন সাজিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ কোর্স বিশেষজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে পড়ানো হচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমরা ইসলাম সম্পর্কে যত সামান্য জানতে পারছি। তাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়টি সমাধান করা উচিত।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বিভাগগুলো একাডেমিক ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা পায়। উপাচার্য ইচ্ছা করলেই কোনো বিষয় চাপিয়ে দিতে পারেন না। আর মূল সমস্যা হলো— কোর্সটির সিলেবাস সম্পূর্ণভাবে করা হলেও শিক্ষকদের পাঠদানের ত্রুটির কারণে শিক্ষার্থীরা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে না। তাই, সকল বিভাগের চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত করতে হবে।

থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, বর্তমানে ইসলামিক স্টাডিজ কোর্স নিজ বিভাগের শিক্ষকদের দিয়ে পরিচালিত করে গুরুত্বহীন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি বাধ্যতামূলক ক্রেডিট কোর্স হিসেবে আওতাভুক্ত করতে পারে।‌ বর্তমানে যে কাঠামোতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে অনেকাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে জাগতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ে সিলেবাস করতে হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য ও দর্শনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

উপ–উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের আলেমদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য— সাধারণ শিক্ষার সাথে ইসলামি শিক্ষার সমন্বয় করে যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা। বর্তমানে মাদ্রাসা ও কলেজ ব্যাকগ্রাউন্ড শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভাবে বাংলাদেশ  ও  ইসলামিক স্টাডিজ নামে যে নন–ক্রেডিট কোর্স চালু আছে, তা সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত এবং যথেষ্ট নয়।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে উপ–উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যার মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষার মান সম্প্রসারণ হবে।

সবার দেশ/এমকেজে