বিআইএফসির অর্থআত্মসাৎ
দুদকের ডজন মামলা থাকার পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে মেজর মান্নান
প্রসঙ্গত মেজর (অব.) মান্নান বিকল্প ধারার সাবেক মহাসচিব। তিনি এবং মাহি বি চৌধুরী শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দিতে রাতের ভোটের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নেন। কারচুপি ও জালিয়াতির মাধ্যমে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

এক ডজনের বেশি মামলার আসামী হয়েও ধরাছোঁয়ার বাইরে বিকল্পধারাপর মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান। অর্থ জালিয়াতি, মানিলন্ডারিং এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক চেয়ারম্যান তিনি।
তার বেশুমার জালিয়াতির বিরুদ্ধে দুদক প্রায় ১৪টি মামলা করেছে। ওইসব মামলায় মান্নানের স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নান, তার দুই মেয়ে তাজরিনা মান্নান ও তানজিলা মান্নানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আসামী করা হযেছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১৯ মার্চ ঢাকা মহানগর বিশেষ আদালতে দুটি মামলায় শুনানী হয়। কিন্তু আসামীরা আদালতে হাজির হননি। বরাবরের মতো মামলার শুনানির তারিখ আবারও পেছানো হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, দুদকের কাছ থেকে তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যায় নাই।
প্রসঙ্গত মেজর (অব.) মান্নান বিকল্প ধারার সাবেক মহাসচিব। তিনি এবং মাহি বি চৌধুরী শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দিতে রাতের ভোটের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নেন। কারচুপি ও জালিয়াতির মাধ্যমে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
জানা গেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিগত সরকারের আমলে দুদককে নানামূখী চাপে রাখেন মেজর (অব.) মান্নান। যার কারনে ফলে তার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর অভিযোগপত্র বিলম্বিত হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের দোসর মেজর মান্নান ও তার সহযোগীদের অর্থ লুটপাটের মামলাগুলোর অভিযোগপত্র দেয়া হচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে মামলাগুলো ফ্রিজবন্দী হয়ে আছে।
এতগুলো মামলা থাকার পরও মেজর মান্নান বোল পাল্টে এখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের করা নুতন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেয়ার চেস্টা করছেন। তিনি এনসিপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন।
দুদক সূত্রে জানাগেছে, মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান তার স্ত্রী, দুই মেয়ে, এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যোগসাজশে অর্থ আত্মসাত এবং আমানতকারীদের অর্থ লুটপাটের কারনে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) ধ্বংস হয়েছে। মান্নান ও তার পরিবারের সদস্যরা বিআইএফসি থেকে নামে-বেনামে ৮০০ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে। লুটের অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য ছাড়াও অর্থ আত্মসাতে সহযোগী দুদকের মামলার বেশ কয়েকজন আসামীকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন মান্নান।
দুদকের একজন কর্মকর্তা জানান, মেজর (অব.) মান্নানের অর্থ আত্মসাৎ মামলার অন্যতম আসামী তার শ্যালক আহমেদ করিম চৌধুরী ওরফে বুলবুল। তাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে মেজর (অব.)মান্নান প্রচুর অর্থ ব্যয় করে পরিবারসহ কানাডা পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে দুদক তথ্য পেয়েছে। বুলবুল বিআইএফসির অর্থ আত্মসাত, লুটপাট এবং সকল অবৈধ কর্মকান্ডে মেজর (অব.) মান্নানের প্রধান সহযোগী ছিলেন। বুলবুলকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে আবেদন করবে দুদক।
মেজর (অব.) মান্নানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বলেন, মামলাগুলো অনেকদিন আগের। মামলা হয়েছে তদন্ত শেষে শিগরিই চার্জশিট দেয়া হবে।
সবার দেশ/কেএম