শেষ হচ্ছে দুই দশকের এক কিংবদন্তির অধ্যায়
মৃত্যু দিয়েই ‘সিআইডি’ এসিপি প্রদ্যুমনের বিদায়

প্রায় দুই দশকের স্মৃতি, রোমাঞ্চ আর ‘কিছু তো গড়বড় হ্যায়’, ‘দয়া, দরওয়াজা তোড়ো!’ সংলাপ—সবকিছুর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছিল একটি কাল্ট ফলোয়িং। এসিপি প্রদ্যুমন, মানে শিবাজি সাতম, সেই ঐতিহাসিক চরিত্রটি এবার সত্যি সত্যিই বিদায় নিচ্ছেন। আর সেটা হবে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে—একটি বিস্ফোরণের দৃশ্যে পর্দায় তার শেষ উপস্থিতি।
সিরিজের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি
১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হওয়া ‘সিআইডি’ ছিল শুধু একটা শো নয়, বরং ভারতীয় সাবকালচার, এমনকি বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যেও এক স্থায়ী অনুভূতি। শিবাজি সাতমের অভিনয়ে এসিপি প্রদ্যুমন চরিত্রটি হয়ে উঠেছিল নিখুঁত নেতৃত্ব, যুক্তি আর একধরনের ঠান্ডা অথচ দৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রতীক।
তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে একপ্রকার যুগের অবসান ঘটছে। এমনটা যেন কোনও সুপারহিরোর শেষ দৃশ্য—যেখানে তিনি নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালন করে জীবনের শেষ মূল্য দিচ্ছেন।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া: ধোঁয়াশা, কষ্ট, ক্ষোভ
সনি এন্টারটেইনমেন্টের পোস্টে “Rest in Peace ACP” হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করার পর মুহূর্তেই শুরু হয় জল্পনা, বিভ্রান্তি—অনেকে ভেবেই বসেছিলেন শিবাজি সাতম নিজেই মারা গেছেন। পরে যখন জানা গেলো এটি ছিল কেবল চরিত্রের মৃত্যু, তবুও মেনে নিতে পারছেন না অনেকে।
অভ্যন্তরীণ সংকটের ইঙ্গিত
খবরে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ ও প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে মতানৈক্যর কারণেই শিবাজি সাতম ‘সিআইডি ২’ ছাড়ছেন। সিরিজে তার জায়গায় নতুন এসিপি আনার পরিকল্পনা চলছে, তবে প্রশ্ন উঠেছে—প্রদ্যুমনহীন সিআইডি কি আগের সে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে?
বাকি চরিত্র ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ইতোমধ্যে ইন্সপেক্টর ফ্রেডরিক্স বিদায় নিয়েছেন। তবে দয়া ও অভিজিৎ থাকছেন নতুন পর্বে। ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া নতুন সিজনের ১৮টি পর্ব ধারাবাহিকভাবে সম্প্রচারিত হচ্ছে সনি ওটিটি এবং টেলিভিশনে।
সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া
‘সিআইডি’ অনেকটা আমাদের ছোটবেলার বিকেল, ছুটির দিনের রহস্য আর পরিচিত মুখগুলোর সঙ্গে তৈরি হওয়া এক আত্মিক সম্পর্ক। শিবাজি সাতমের প্রদ্যুমন শুধু একজন চরিত্রই ছিলেন না—তিনি ছিলেন ভারতীয় ক্রাইম থ্রিলার টিভি ধারাবাহিকের এক অনন্য স্তম্ভ। তার প্রস্থানে যেমন একটা যুগের ইতি টানা হলো, তেমনি নতুন প্রশ্নও উঠলো—এই শো কি সত্যিই বাঁচবে প্রদ্যুমন ছাড়া? সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, সনি এন্টারটেইনমেন্ট
সবার দেশ/কেএম