বদলাতে পারে ইন্টারনেটের দৃশ্যপট
বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক
স্টারলিংক সীমাহীন উচ্চগতির ডেটা অফার করে যা প্রতি সেকেন্ডে ১৫০ মেগাবিট (এমবিপিএস) ইন্টারনেট গতি সরবরাহ করে। স্পেসএক্স আগামীতে এ হার দ্বিগুণ করারও পরিকল্পনা নিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ গতি ২৫ এমবিপিএসের মতো।

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক এবার বাংলাদেশে ব্যবসার অনুমোদন পেয়েছে। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেস এক্সের এ সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) নিবন্ধন দিয়েছে।
রোববার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটনে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা তাদের ৯০ দিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং সে অনুযায়ী ২৯ মার্চ স্টারলিংককে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে।
লাইসেন্স প্রক্রিয়া চলছে
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (NGSO) লাইসেন্সের আবেদন স্টারলিংক আজ (রোববার) জমা দেয়ার কথা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করা হলে বিডা তা অনুমোদন করবে এবং ব্যবসা পরিচালনায় আর কোনো বাধা থাকবে না।
৯ এপ্রিল পরীক্ষামূলক সেবা
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে ৯ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে। সম্মেলনে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা স্টারলিংকের মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পাবেন। এমনকি সম্মেলনের লাইভ সম্প্রচারও করা হবে এ স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহার করে। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে।
গ্রামীণ ডিজিটাল বিপ্লবের সম্ভাবনা
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংকের আগমন দেশের দুর্গম ও অনুন্নত এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছাতে এক বিশাল সুযোগ তৈরি করবে। শহর-গ্রামের মধ্যে ইন্টারনেট সেবায় যে বড় ব্যবধান রয়েছে, তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার, উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি হবে বড় সুযোগ।
ইউনূস-মাস্ক সংযোগ
এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ইলন মাস্কের মধ্যে টেলিফোনে আলোচনা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশের জন্য স্টারলিংক চালু ও সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয় উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। প্রাথমিকভাবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বড় কোম্পানি এবং ই-কমার্স ও ডিজিটাল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো স্টারলিংকের গ্রাহক হতে পারে। স্টারলিংক ছোট উপগ্রহের একটি অ্যারের মাধ্যমে সীমাহীন উচ্চগতির ডেটা অফার করে যা প্রতি সেকেন্ডে ১৫০ মেগাবিট (এমবিপিএস) ইন্টারনেট গতি সরবরাহ করে। স্পেসএক্স আগামীতে এ হার দ্বিগুণ করারও পরিকল্পনা নিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ গতি ২৫ এমবিপিএসের মতো। বিশ্বের দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রদানকারী ১০৮টি দেশের মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৯০তম।
বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থায় এটি হতে পারে একটি গেম চেঞ্জার পদক্ষেপ—বিশেষ করে অফলাইন বা দুর্যোগপ্রবণ এলাকায়। প্রশ্ন এখন শুধু—স্টারলিংক কত দ্রুত, কতটা সাশ্রয়ী ও টেকসইভাবে নিজেদের সেবা বিস্তার করতে পারে?
সবার দেশ/কেএম