বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার পথে
স্টারলিংককে সবুজ সংকেত দিলো বিটিআরসি

ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্টারলিংক বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদানের লাইসেন্স পাওয়ার পথে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইতোমধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে লাইসেন্স অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. এমদাদ উল বারী জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেড গত ৭ এপ্রিল বিটিআরসির ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর’ নির্দেশিকা অনুযায়ী লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। কোম্পানির স্থানীয় অফিস ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত। বিটিআরসি আবেদন যাচাইয়ের জন্য একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে এবং পরে দুই সদস্যের একটি দল কোম্পানির অফিস পরিদর্শন করে লাইসেন্সের সুপারিশ করে। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, এটি এ ধরনের লাইসেন্সের ক্ষেত্রে দ্রুততম সুপারিশ।
গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের বাণিজ্যিক উদ্বোধন ৯০ দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। এর আগে, ২৯ মার্চ স্টারলিংক বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন পায়। পরীক্ষামূলকভাবে ৯ এপ্রিল ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু হয়, যেখানে ব্যবহারকারীরা ১৭০-২২০ এমবিপিএস গতি পেয়েছেন।
স্টারলিংক ৬,০০০-এর বেশি স্যাটেলাইট পরিচালনা করে বিশ্বজুড়ে তিন মিলিয়নের বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে, বিশেষত দুর্গম এলাকায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে অ্যামাজনের প্রজেক্ট কুইপার, ওয়ানওয়েব ও টেলিস্যাট। সেবার মূল্য বাজারভেদে ভিন্ন; যুক্তরাষ্ট্রে মাসিক ১২০ ডলার এবং আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে ৩০-৪০ ডলার। প্রাথমিক সরঞ্জামের (ডিশ ও রাউটার) খরচ ২০০-৫০০ ডলার।
শিল্প বিশ্লেষকদের মতে, স্টারলিংকের সাফল্য নির্ভর করবে সরকারের নীতিমালা, মূল্য নির্ধারণ ও স্থানীয় বাস্তবতার ওপর। মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে স্টারলিংক কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে সেবা চালু করতে পারবে, যা দেশের ডিজিটাল সংযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সবার দেশ/কেএম