Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

বিচ্ছেদের পর অন্তত দুই বছর বিষয়টি আমাদের পীড়া দেয়: বিল গেটস

মেলিন্ডার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ভুল ছিলো

বিল গেটস বলেন, নানা ঘটনার স্মৃতি ও সন্তান নিয়ে একসঙ্গে জীবন কাটানো নিশ্চয় দারুণ একটি বিষয়। বিচ্ছেদের ঘটনাটি তিনি সারা জীবনের ব্যর্থতার ‘তালিকার শীর্ষে’ রাখবেন। তিনি বলেন, আরও অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। তবে কোনোটাই এ রকম নয়।

মেলিন্ডার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ভুল ছিলো
ছবি: ইন্টারনেট

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস স্বীকার করেছেন, তিনি ‘এখন উৎফুল্ল’। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, মেলিন্ডা ফ্রেন্সের সঙ্গে দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানা তার ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। তিনি বলেন, এ ভুলের জন্য আমি সবচেয়ে বেশি অনুতপ্ত।

গত শনিবার লন্ডনের দ্য টাইমস পত্রিকাকে তিনি এসব কথা বলেন। বিল গেটস বলেন, বিচ্ছেদের পর অন্তত দুই বছর বিষয়টি আমাকে ও মেলিন্ডাকে পীড়া দিয়েছিলো। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা আশা করেছিলেন, বাবা বিল সিনিয়র ও মা মেরির মতো তার ও মেলিন্ডার দাম্পত্যজীবনও মধুর হবে। তার মা–বাবা দীর্ঘ ৪৫ বছর একসঙ্গে ছিলেন।

বিল গেটস বলেন, নানা ঘটনার স্মৃতি ও সন্তান নিয়ে একসঙ্গে জীবন (বিবাহিত জীবন) কাটানো নিশ্চয় দারুণ একটি বিষয়। মানবহিতৈষী এ মার্কিন নাগরিক আরও বলেন, বিচ্ছেদের ঘটনাটি তিনি সারা জীবনের ব্যর্থতার ‘তালিকার শীর্ষে’ রাখবেন। তিনি বলেন, আরও অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। তবে কোনোটাই এ রকম নয়।

সাবেক এ জুটির প্রথম দেখা হয় ১৯৮৭ সালে। ওই বছরই মাইক্রোসফটের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তারা। মেলিন্ডা তখন মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট ম্যানেজার। বিল তখন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। তিনি মেলিন্ডাকে পার্কিং লটে ডেটিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে কথা প্রচলিত রয়েছে।

পাক্কা সাত বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর ১৯৯৪ সালের শুরুর দিকে বিয়ে করেন বিল ও মেলিন্ডা। এ দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। জেনিফার (২৮), রোরি (২৫) ও ফিবি (২২)। ৬৯ বছর বয়সী এ ধনকুবের বলেন, মেলিন্ডা ও আমার যখন দেখা হয়, তখন আমি মোটামুটি সফল ছিলাম। কিন্তু বিরাট সফল হয়েছিলাম, সেটা বলা যাবে না। আমাদের বিয়ের পরই বড় রকমের সাফল্য এসেছিলো।’

২০২১ সালে বিল ও মেলিন্ডা বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এর এক বছর আগে থেকেই তারা আলাদা থাকছিলেন। বিচ্ছেদের ঘোষণার দিন তারা বলেন, জীবনের পরের ধাপে দম্পতি হিসেবে তারা একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। বিল বলেন, বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া আমাদের জন্য কঠিন বিষয় ছিল। এরপর তিনি (মেলিন্ডা) ফাউন্ডেশন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমি হতাশ হই।

বিল ও মেলিন্ডা মিলে দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ গড়ে তুলেছিলেন। এ ফাউন্ডেশন বিশ্বের নানা প্রান্তে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য, রোগবালাই ও বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে এ ফাউন্ডেশন। বিচ্ছেদের তিন বছর পর ২০২৪ সালে মেলিন্ডা ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলে এর নাম পাল্টে গেটস ফাউন্ডেশন করা হয়।

বিল স্বীকার করেন, বিচ্ছেদের পর ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘টুডে’র উপস্থাপক সাভানা গুথরি এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটসকে প্রশ্ন করেছিলেন, তাদের বিচ্ছেদের পেছনে কোনো অবিশ্বাস কাজ করেছে কি না। এ সময় তিনি স্বীকার করেন, তিনি তার পরিবারকে ‘যন্ত্রণা দিয়েছেন’। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

একই বছর যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ‘সিবিএস মর্নিং’–এ যান মেলিন্ডা। ওই অনুষ্ঠানে তিনি ইঙ্গিত করেন, যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিল গেটসের সম্পর্ক তাদের বিচ্ছেদের একটি কারণ। মেলিন্ডা বলেন, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে তার ওঠাবসা আমি পছন্দ করতাম না। বিষয়টি তাকে (গেটস) খুলেও বলেছি। তিনি (জেফরি) জঘন্য মানুষ ছিলেন। তিনি খারাপ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।
৬০ বছর বয়সে মেলিন্ডা যখন বিবাহবিচ্ছেদের কাগজপত্র প্রস্তুত করেন, তখন বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ২৭ বছর বৈবাহিক জীবন কাটালেও বিল গেটস ও মেলিন্ডা কোনো প্রাক্‌-বৈবাহিক চুক্তি করেননি। তবে তারা ‘বিচ্ছেদের চুক্তি’ করেছিলেন।

২০২৩ সালে এনসিআর গ্লোবালের সাবেক নির্বাহী পলা হার্ডের সঙ্গে দেখা–সাক্ষাৎ (ডেটিং) শুরু করেন বিল গেটস। তিনি ওরাকলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক হার্ডের স্ত্রী ছিলেন। মার্ক হার্ড ২০১৯ সালে মারা যান। অন্যদিকে মেলিন্ডাও ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার ছেলেবন্ধু ফিলিপ ভনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসেন। সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট

সবার দেশ/এমকেজে

সম্পর্কিত বিষয়: