রণক্ষেত্র কোলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

রাত পেরিয়ে সকাল হলেও থমথমে কোলকাতার ঐতিহ্যবাহী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় । শনিবার (১ মার্চ) দিনভর অশান্তির পর রবিবার সকালে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে ছেঁড়া ব্যানার ও হোর্ডিং।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই ঘেরাও করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি। তা আটকাতে গেলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। বামপন্থী এবং অতি বাম ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পাইলট গাড়ি।
শিক্ষামন্ত্রী আহতও হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের পালটা দাবি, মন্ত্রীর গাড়িতে চাপা পড়েছেন এক ছাত্র। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তীতে যাদবপুর থানার সামনের রাস্তা অবরুদ্ধ করে এসএফআই। রাতে মিছিল করে তৃণমূলও। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ, বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসরা।
এ অশান্তির আঁচ রাতেও নেভেনি সেখানে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। এ আবহে রাতের দিকে আন্দোলকারীদের হাতে হেনস্থার শিকার হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত।
জানা গিয়েছে, যাদবপুরে সংঘর্ষে জখম শিক্ষার্থীদের দেখতে শনিবার রাতে কেপিসি হাসপাতালে গিয়েছিলেন উপাচার্য। সেখানেই হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন তিনি। তার পোশাক ছিঁড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনা প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমাকে দেখে হঠাৎ এক দল ছাত্রী তেড়ে আসে এবং আমাকে ধাক্কা মারে। কয়েকজন ছাত্রী আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেয়। পরে হাসপাতালে থাকা কয়েকজন ছাত্র আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে আমার গাড়ির সামনে অনেক ছাত্র চলে আসে। কোনও রকমে আমি ওখান থেকে বেরিয়ে যাই। এ ঘটনায় আমি হতবাক। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে স্বাভাবিকভাবেই মনে করছেন উপাচার্য। ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষার পরিবেশ তো নষ্ট হচ্ছেই। তবে আমি নৈরাশ্যবাদী নই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক পরিস্থিতি, অনেক জটিলতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। উপাচার্যদের উপরও তার প্রভাব পড়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত আমি আশাবাদী। আবার বিশ্ববিদ্যালয় আগের গৌরব ফিরে পাবে।
সবার দেশ/কেএম