Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৬ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ০৬:০৩, ৬ মার্চ ২০২৫

জাতিসংঘে মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক

জুলাই গণহত্যা নিয়ে বাংলাদেশ চাইলে আইসিসিতে যেতে পারে

একজন প্রশ্নকর্তা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ বিষয়ে সরকারের হাতে পরিসংখ্যান আছে বলে জানান তিনি।

জুলাই গণহত্যা নিয়ে বাংলাদেশ চাইলে আইসিসিতে যেতে পারে
ফাইল ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন-নির্যাতনের বিচার ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘে মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। বলেছেন, সার্বজনীন বিচারব্যবস্থায় এসব ঘটনা যদি সরকার চায় তাহলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে (আইসিসি) রেফার করতে পারে।

গতকাল ৫ই মার্চ জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো, নাগরিক সমাজসহ সাংবাদিকদের সামনে তিনি জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। তবে ওই রিপোর্ট গত ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে ওয়েবসাইটে। তার বিস্তারিত ছাপা হয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।

গতকাল মূলত সদস্য রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই রিপোর্ট উপস্থাপন করেন ভলকার তুর্ক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, জুলাই ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহমুদুর রহমান, মায়ের ডাকের সানজিদা ইসলামসহ বেশকিছু পরিচিত মুখ। 

ভলকার তুর্ক জুলাই আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় আহতদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন নভেম্বরে।

তিনি বলেন, সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য এদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা। আগে থেকেই জাতিসংঘ বাংলাদেশ ফেসবুকে ও তার ব্রিফিং সম্পর্কে জানানো হয়। বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। এতে জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্কারের সুপারিশ তুলে ধরা হয়। 

১২ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ‘হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন্স অ্যান্ড অ্যাবিউসেস রিলেটেড টু দ্য প্রটেস্টস অব জুলাই অ্যান্ড আগস্ট ২০২৪ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয় সেখানে। ভলকার তুর্ক বলেন, আমাদের তদন্তে নিরপেক্ষতা ছিলো, পক্ষপাতিত্ব ছিলো না। আমাদের টিমকে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবপক্ষ পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দিয়েছে। ১২ই ফেব্রুয়ারির রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের কর্মকর্তারা, নিরাপত্তা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আইন লঙ্ঘন করেছেন। 

তারা মারাত্মকভাবে সুসংগঠিতভাবে, পর্যায়ক্রমে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। এর মধ্যে আছে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, খেয়ালখুশিমতো আটক রাখা, অশোভন আচরণ করা। সাবেক ক্ষমতাসীন নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা খাতের সিনিয়র কিছু কর্মকর্তার সজ্ঞাতে, সমন্বয় ও নির্দেশনায় এসব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিলো। তা হলো বিক্ষোভকারীদের কণ্ঠকে রুদ্ধ করা। উদ্দেশ্য ছিলো সাবেক সরকারকে আরও সময় ক্ষমতায় রাখা। কিন্তু আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, তাতে সুনির্দিষ্ট অপরাধের কথা আছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা এবং তাদের সহিংস সমর্থনকারীরা এসব অপরাধ করেছে। 

ভলকার তুর্ক বলেন, আমরা মেডিকেল কেয়ার, নিরাপত্তা রক্ষাকারী এবং গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি।

তিনি শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড রহিত করে তা লঘু করার আহ্বান জানান। ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংবাদিক, নাগরিক নানা রকম প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তার জবাব দেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। 

একজন প্রশ্নকর্তা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ বিষয়ে সরকারের হাতে পরিসংখ্যান আছে বলে জানান তিনি। তিনি বাংলাদেশে ভোটের অধিকার ফেরানোর জন্য সংস্কারের কথা বলেন। এ জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। 

ভলকার তুর্ক আবারও বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার পূর্ণ সহযোগিতামূলক। তারা জাতিসংঘকে ওই রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এবং মেকানিক্যাল সমর্থন দিয়েছে। ঢাকায় অনেক পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। অতীতকে পিছনে ফেলে একটি সফল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সে সুযোগ। 

ভলকার তুর্ক মাঠপর্যায়ে অভিজ্ঞতা নেয়ার কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনের আহতদের দেখতে গিয়েছেন। তাদের কাছে শুনেছেন প্রকৃত অবস্থা। এ জন্য তাদের সুচিকিৎসার আহ্বান জানান তিনি।

সবার দেশ/এনএন