সামরিক অভিযান চালালে হত্যার হুমকি
৫০০ যাত্রীসহ পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক
কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএলএ ঘোষণা করে, যদি সামরিক বাহিনী কোনও অভিযানের চেষ্টা করে, তাহলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। শত শত জিম্মিকে হত্যা করা হবে এবং এ রক্তপাতের দায় সম্পূর্ণরূপে সামরিক বাহিনীর ওপরে বর্তাবে।

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের কাচ্চি’তে ম্যাচ শহরের আবে গাম এলাকায় জাফর এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটিকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। এতে জিম্মি করা হয়েছে প্রায় ৫০০ যাত্রী ও আরোহীকে।
ভারতের টাইমস নাউ খবরে জানায়, ছয়জন সামরিক কর্মীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। কিন্তু পাকিস্তানি মিডিয়ায় নিহতের তথ্য এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ট্রেনটি গুদালার এবং পিরু কোনেরি এলাকার ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে। বিএলএ সতর্ক করে দিয়েছে যে তাদের বিরুদ্ধে যেকোনও সামরিক অভিযান হলে সমস্ত জিম্মিকে হত্যা করা হবে। তারা পুরো ট্রেনটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিএলএ জানিয়েছে- তাদের যোদ্ধারা মাশকাফ, ধাদার, বোলানে পূর্বপরিকল্পিত অভিযান পরিচালনা করেছে। দলটি জানিয়েছে - আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা রেলপথ উড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে জাফর এক্সপ্রেস থামতে বাধ্য হয়েছে। যোদ্ধারা দ্রুত ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং সমস্ত যাত্রীকে জিম্মি করে।
কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএলএ ঘোষণা করে, যদি সামরিক বাহিনী কোনও অভিযানের চেষ্টা করে, তাহলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। শত শত জিম্মিকে হত্যা করা হবে এবং এ রক্তপাতের দায় সম্পূর্ণরূপে সামরিক বাহিনীর ওপরে বর্তাবে।
বিএলএ আরও জানিয়েছে, তাদের বিশেষায়িত ইউনিট- মাজিদ ব্রিগেড, এসটিওএস এবং ফতেহ স্কোয়াড- এ আক্রমণটি চালিয়েছে এবং যেকোনও সামরিক হস্তক্ষেপের প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে। টাইমস নাউ জানায়, হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএলএ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ছয়জন সামরিক কর্মী নিহত হয়েছেন এবং শত শত যাত্রী বিএলএ’র হেফাজতে রয়েছেন।
বেলুচ লিবারেশন আর্মির মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ পুনর্ব্যক্ত করেন, এ অভিযানের দায় তাদের দল সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করছে। ওদিকে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ম্যাচ-এর কাছে আব গাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় প্রায় ৬জন ব্যক্তি ট্রেনে ফাঁকা গুলি করেছে। ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে গেছেন উদ্ধারকর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। হামলাকারীদের শনাক্ত করার অভিযান চলছে।
রেল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, এর চালক গুরুত্বর জখম হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত। তাদেরকে সহযোগিতা করতে একটি ইমার্জেন্সি ট্রেন পাঠানো হয়েছে। হামলার পর কর্তৃপক্ষ পেশোয়ার-কোয়েটা জাফর এক্সপ্রেস পূর্ব সতর্কতা হিসেবে বন্ধ রেখেছে। শিবি হাসপাতালে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। অর্থাৎ স্টাফদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রেলওয়ে কন্ট্রোলার মুহাম্মদ কাশিফ বলেন, এ ট্রেনে ছিলো ৯টি কোচ। আরোহীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০। ৮ নম্বর টানেলে সশস্ত্র ব্যক্তিরা অপেক্ষা করে। ট্রেনের যাত্রী ও স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।
সবার দেশ/কেএম