আটকা পড়েছে ৮০ শ্রমিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
ভূমিকম্পে ব্যাংককে ৩০ তলা ভবনধস, নিহত ১
ভূমিকম্পের উৎপত্তি মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিলো। এ ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিলো যে, থাইল্যান্ড ছাড়াও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশেও তা অনুভূত হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল ৭:০০ টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ৭.৭ মাত্রার এ শক্তিশালী ভূমিকম্পের epicenter ছিলো মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চল থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, এবং এর গভীরতা ছিলো ১০ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের ফলে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়েছে, এতে একজন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত বা আটকে পড়েছেন।
থাইল্যান্ডের জাতীয় জরুরি চিকিৎসা ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, ব্যাংককের উত্তর অঞ্চলে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে কমপক্ষে ৮০ জন শ্রমিক আটকে পড়েন, তবে তাদের মধ্যে কয়েক ডজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের তীব্র কম্পনে ব্যাংককের এক বিলাসবহুল হোটেলের ছাদ থেকে পানি পড়তে দেখা গেছে, যা সুইমিং পুল থেকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। এতে হোটেলের অতিথিরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। বিভিন্ন ভবনের কাঁচ ভেঙে যায় এবং বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হোটেল, অফিস এবং বাসস্থানসহ বহু স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পের প্রভাব শুধু ব্যাংককে নয়, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারেও ব্যাপকভাবে অনুভূত হয়েছে। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ম্যান্ডালে বেশ কয়েকটি বড় ভবন ভেঙে পড়েছে। সেখানে অন্তত কয়েকজন আহত হয়েছেন, তবে এখনও ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
থাই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার কার্যক্রম চলছে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য জরুরি সেবা দ্রুত পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকক ও আশপাশের অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অতিবিকৃত এ ভূমিকম্পের কারণে ব্যাংকক ও অন্যান্য শহরের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকতে পারেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, নিরাপত্তা এবং উদ্ধার কাজের জন্য সকল দিক থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তি মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিলো। এ ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিলো যে, থাইল্যান্ড ছাড়াও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশেও তা অনুভূত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যদিও এ ভূমিকম্পটি একটি বড় মাত্রার ছিলো, তবে এর পরবর্তী কিছু ছোট ভূমিকম্প হতে পারে। তাদের মতে, এটি একটি ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের চেইন হতে পারে, তাই জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এ ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও, এখনও অনেকের খোঁজ পা্রয়া যায়নি। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে এবং পরিস্থিতি আরও উন্নতি হওয়ার আগে মানুষকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সবার দেশ/কেএম