কঠোর বিধিনিষেধেও হার মানেনি ঈমান
আল-আকসায় ঈদের নামাজে মুসল্লিদের ঢল

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও পবিত্র জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় স্থাপনায় ঈদের নামাজ আদায়ে ঢল নামে হাজার হাজার মুসল্লির।
কঠোর নিরাপত্তা আর বাধার মধ্যেও ঈদের জামাত
রবিবার (৩০ মার্চ) ঈদের নামাজ উপলক্ষে ভোর থেকেই ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা আল-আকসা মসজিদ অভিমুখে যাত্রা করেন। কিন্তু পথে পথে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর তল্লাশি ও বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের।
তবুও রমজানের শেষে ঈদের দিন আল-আকসায় নামাজ আদায়ে অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি। শেষ রমজানের দিনও সেখানে ৭৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেছিলেন। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ফিলিস্তিনিদের জন্য ঈদের দিনেও আতঙ্ক
মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশে ঈদুল ফিতর আনন্দমুখর পরিবেশে পালিত হলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য দিনটি আতঙ্কের বার্তা বয়ে আনে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। ঈদের দিনেও দখলদার বাহিনীর অবস্থান ছিলো কঠোর। মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। অনেকে মসজিদে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে রাস্তার মোড়ে কিংবা ঘরের ছাদে নামাজ আদায় করেন অনেকে।
ঐতিহাসিক পটভূমি: আল-আকসার গুরুত্ব
মসজিদ আল-আকসা মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে, যার পর থেকে সেখানে দখলদার শক্তির দমন-পীড়ন বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ
ইসরায়েলের এ দমননীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মুসলিম দেশসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া ও কাতারসহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশ আল-আকসায় মুসল্লিদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের তব্রি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি জনগণের সংগ্রাম ও ভবিষ্যৎ
ফিলিস্তিনি জনগণ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তাদের ধর্মীয় ও জাতীয় অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আল-আকসা শুধু একটি মসজিদ নয়, এটি তাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক।
ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতর মুসলিমদের জন্য আনন্দের বার্তা বয়ে আনে। কিন্তু ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের জন্য এ দিনেও কষ্ট ও বাধা রয়ে যায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উচিত, ফিলিস্তিনের জনগণের ধর্মীয় ও মৌলিক অধিকার রক্ষায় আরও সোচ্চার হওয়া।
সবার দেশ/কেএম