সীমান্তে উত্তেজনা, বাড়ছে যুদ্ধের শঙ্কা
ভারতকে হটিয়ে কাশ্মীর দখলে নিচ্ছে পাকিস্তান!

দীর্ঘদিনের শত্রুতা, তিনটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং অসংখ্য সীমান্ত সংঘর্ষের পর ভারত ও পাকিস্তান আবারও নতুন করে সংঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে—আর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সে পুরনো, অমীমাংসিত ইস্যু: কাশ্মীর।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির একটি মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, কাশ্মীর নিয়ে আমরা তিনটি যুদ্ধ করেছি, প্রয়োজনে আরও দশটি করবো। ভারতকে ভয় পাই না। এ মন্তব্যের পরই শুরু হয় সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সূচনা।
বিশ্বস্ত সামরিক সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন আগে পাকিস্তানি সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) অতিক্রম করে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অংশে প্রবেশ করে। সেখানে ঘটে মাইন বিস্ফোরণ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে তুমুল গোলাগুলি। যদিও এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি, তবে সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও সতর্কতা অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
অস্ত্র বিরতির পরে প্রথম বড় সংঘাত
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও পাকিস্তান অস্ত্র বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলো। এরপর বেশ কিছুটা শান্ত সময় পার করে দুই দেশ। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ‘অনুপ্রবেশ’ সে চুক্তির বাস্তবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
গুজরাটে ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত
এদিকে এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে ভারতের গুজরাটে। জামনগরের কাছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি ফাইটার জেট বিধ্বস্ত হয়। এতে একজন পাইলট ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অপর পাইলট গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যদিও এটি দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা—তা নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে, তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে। কিছু ভারতীয় নেটিজেন ইতোমধ্যে এটি পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন।
পাকিস্তানের নীরবতা, ভারতের কূটনৈতিক চাপ
এ পরিস্থিতিতে ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তবে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিশ্লেষকদের শঙ্কা
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যদি সরাসরি সংঘর্ষ শুরু হয়, তবে তা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা বিশ্বেই নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করবে। অনেকে এটিকে ‘নতুন এক ঠাণ্ডা যুদ্ধের’ সূচনা বলেও উল্লেখ করছেন।
যেখানে বিশ্ব যুদ্ধ এড়াতে কূটনীতির দিকে ঝুঁকছে, সেখানে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আবারও বারুদের গন্ধ। কাশ্মীরের ভূমি একটুও বদলায়নি, কিন্তু রাজনীতি আর হুংকারে বারবার জর্জরিত হচ্ছে অঞ্চলের শান্তি। এখন দেখার বিষয়, এ উত্তেজনা আলোচনার মাধ্যমে থামে, না কি এক অন্ধকার সংঘাতের দিকে গড়ায়।
সবার দেশ/কেএম