ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের ‘সরকারি বিভাগ পুনর্গঠন’ পরিকল্পনা এবং ইলন মাস্কের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ আন্দোলন হতে পারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (৫ এপ্রিল) দেশজুড়ে প্রায় ১,২০০ স্থানে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলে।
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের ‘সরকারি বিভাগ পুনর্গঠন’ পরিকল্পনা এবং ইলন মাস্কের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ আন্দোলন হতে পারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন।
আন্দোলনের কারণ ও বিস্তার
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক নীতিমালাগুলো, যেমন: গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বিভাগগুলোকে বেসরকারিকরণে ইলন মাস্কের প্রভাব, অভিবাসন নীতির কঠোরতা, বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের চেষ্টাসহ সরকারি কর্মীদের ব্যাপক ছাঁটাই এবং আমদানি পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ— এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ন্যাশনাল মলে বিশাল সমাবেশ
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মলে সমবেত হন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে অনেকে ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের পতাকা হাতে, কেউ কেউ ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা পোস্টার বহন করছিলেন। বিভিন্ন বর্ণ, পেশা ও বয়সের মানুষের অংশগ্রহণে এই বিক্ষোভ যেন এক বহুমাত্রিক জনসমুদ্র হয়ে ওঠে।
নেতৃত্বে শতাধিক সংগঠন
এ বিক্ষোভে অংশ নেয় দেড় শতাধিক অ্যাক্টিভিস্ট সংগঠন। নিউ জার্সির প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লিন বলেন, আমি চাই এ দেশ আবার স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক হোক। ট্রাম্প আমাদের সিস্টেমকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
একক ট্রাম্প সমর্থক ও উত্তেজনা
রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভে অংশ নেয়া সবাই ট্রাম্পবিরোধী ছিলেন না। ওহাইও থেকে আসা ২০ বছর বয়সী কাইল নামে এক ট্রাম্প সমর্থক ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ টুপি পরে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন এবং এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের পুনঃউত্থান ও ইলন মাস্কের সরকারি পর্যায়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা দেশের রাজনীতিতে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এ বিক্ষোভ তারই একটি বহিঃপ্রকাশ, যেখানে জনগণ সরাসরি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করছে।
এ বিক্ষোভ ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠদের জন্য রাজনৈতিকভাবে একটি বড় বার্তা, যে আমেরিকান জনতা এখন আগের মতো নিরব নয়। আগামী নির্বাচনের আগে এ ধরনের আন্দোলন দেশটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
সবার দেশ/কেএম