‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগানে উত্তাল আমেরিকা
ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র

নির্বাহী ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার, কেন্দ্রীয় কর্মী ছাঁটাইসহ একের পর এক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন নাগরিকরা। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ এখন সর্ববৃহৎ রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত ‘হ্যান্ডস অফ’ নামক এ আন্দোলনে অংশ নেয় দেশের ৫০টি স্টেটের প্রায় ১,২০০টি বিক্ষোভ-সমাবেশ। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, টেক্সাস, শিকাগো, ফ্লোরিডা, মিনেসোটা, ওরেগন, আইওয়াসহ প্রায় প্রতিটি বড় শহরে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।
বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল তীব্র বার্তা সংবলিত প্ল্যাকার্ড:
- ‘ডেমোক্র্যাসি, নট ডিক্টেটরশিপ’
- ‘যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা নেই’
- ‘রাজতন্ত্র মানি না, মানব না’
- ‘মাস্ককে মঙ্গলগ্রহে পাঠাও’
- ‘ডিওজিই-কে চাকরিচ্যুত করুন’
বিক্ষোভে ট্রাম্পের পাশাপাশি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্ককেও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। জনতার কণ্ঠে ছিলো ক্ষোভ, অনিশ্চয়তা এবং গণতন্ত্র রক্ষার আহ্বান। আন্দোলনকারীরা স্পষ্টভাবে জানান, আমরা আতঙ্কিত, ক্ষুব্ধ। আমাদের দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, তা ভেবে আমরা হতভম্ব।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আমলাতন্ত্র ও নীতিনির্ধারণী কাঠামোতে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন, তাতে স্বাভাবিক শাসনপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ‘হ্যান্ডস অফ’ আন্দোলনকে তারা গণতন্ত্র রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ জাগরণ হিসেবে দেখছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক নাগরিক বলেন, আমরা রাজা চাই না, আমরা চাই উত্তরদায়ী নেতৃত্ব।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এমন সর্বব্যাপী বিক্ষোভ বিরল। ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত পদক্ষেপ এবং ইলন মাস্কের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা—দুয়ের মিলেই জনরোষকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এ বিক্ষোভ ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সবচেয়ে বড় গণ-প্রতিবাদ হিসেবে ইতিমধ্যেই ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এ বার্তা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং তা নীতিনির্ধারণে কতটা প্রভাব ফেলে।
সবার দেশ/কেএম