Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ৮ এপ্রিল ২০২৫

মানবাধিকারের সর্বনাশা ষড়যন্ত্রের পথে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল

গাজাবাসীদের দেশছাড়া করতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক

সূত্র জানায়, কিছু নির্দিষ্ট দেশকে চাপ দিয়ে এ মানুষদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছেন এ দুই নেতা। অথচ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুদ্ধের মাধ্যমে জোরপূর্বক জনগণকে উচ্ছেদ করাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

গাজাবাসীদের দেশছাড়া করতে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত

গাজা যেন আজ এক মৃত্যুপুরী। প্রতিদিন গড়ের ওপরে ফিলিস্তিনিদের রক্তে লাল হচ্ছে অবরুদ্ধ উপত্যকা। ঠিক সে সময়েই হোয়াইট হাউসে এক ঘৃণ্য ও গভীর ষড়যন্ত্রের সাক্ষী হচ্ছে বিশ্ব—সেখানে মুখোমুখি বসেছেন দুই মানব রক্তচোষা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

আলোচনার বিষয়- গাজা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের কোন কোন দেশ নিতে পারে।

গণহত্যার ভেতর দিয়ে জবরদখলের খেলা

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ। শুধু সোমবারেই নিহত হয়েছেন আরও ৬০ জন।

আলজাজিরা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর ৪ লাখের বেশি মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। আইডিএফ-এর নির্বিচার বোমাবর্ষণ এবং গুলিবর্ষণে নারী, শিশু, বৃদ্ধ কেউই রেহাই পাচ্ছে না। গাজা সিটি থেকে খান ইউনিস—সবখানেই চলছে ধ্বংসযজ্ঞ।

গোপন আলোচনায় বাস্তুচ্যুতির ষড়যন্ত্র

এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠকে উঠে আসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে পাঠানোর আলোচনা। উদ্দেশ্য, গাজার জনশূন্যকরণ। সূত্র জানায়, কিছু নির্দিষ্ট দেশকে চাপ দিয়ে এ মানুষদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছেন এ দুই নেতা। অথচ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুদ্ধের মাধ্যমে জোরপূর্বক জনগণকে উচ্ছেদ করাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিশ্ব নীরব, যুক্তরাষ্ট্রের উল্টো সুর

ফিলিস্তিনি-মার্কিন বিশ্লেষক ওমর বাদ্দার বলেন, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু এখনো জোরপূর্বক উচ্ছেদের পথে রয়েছে। তাদের এ ষড়যন্ত্র আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। তিনি আরও বলেন, তারা গাজাকে বসবাসের অনুপযুক্ত করে তুলেছে, তারপর বলছে—থাকলে মরো, নইলে চলে যাও। এটাই সহিংস জাতিগত নির্মূল।

কূটনৈতিকভাবে বেপরোয়া নেতানিয়াহু

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সে পরোয়ানার ঝুঁকি এড়াতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান দীর্ঘপথ ঘুরে, এমনকি আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর আকাশসীমাও এড়িয়ে চলেন।

মানবতা হার মানছে রাজনীতির কাছে

ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও হত্যাযজ্ঞ নিয়ে যখন বিশ্বের বিবেকবান মানুষরা রাস্তায়, তখন হোয়াইট হাউসে ঘটে চলেছে ইতিহাসের আরেকটি কলঙ্কময় অধ্যায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতমূলক আচরণ যেন ইঙ্গিত দেয়—প্যালেস্টাইনের জন্য ন্যায়বিচার এখন কেবল স্বপ্ন।

একটি বিষয় স্পষ্ট—ইসরায়েল কেবল যুদ্ধ করছে না, বরং পরিকল্পিতভাবে জনশূন্য করে দখল নিশ্চিত করতে চাচ্ছে গাজা। এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছে এক ধরনের সহায়তাকারী রাষ্ট্র। এবং ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বৈঠক তার সুস্পষ্ট প্রমাণ।

সবার দেশ/কেএম