Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু  

ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত  

ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত  
ছবি: সংগৃহীত

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন সাংবাদিকসহ একই পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সংঘটিত এ হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সি। 

এ ঘটনায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের সংখ্যা ২৩০ ছাড়িয়েছে।  

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) আগ্রাসনে আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনিস, দেইর আল বালাহ, এবং জাবালিয়ায় নতুন করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল, যাতে আরও ১৮ জন নিহত হন।  

গাজায় ধ্বংসলীলা

গাজায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় বাড়িঘর বলতে প্রায় কিছুই অবশিষ্ট নেই। শরণার্থীদের তাবু এখন ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, গাজার ৬৯% ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ধ্বংসযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ৫১,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।  

সাংবাদিকদের ওপর হামলা

কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাতে গাজায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছেছে। সিপিজে’র তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে ১৭৫ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী নিহত হয়েছেন, যা ১৯৯২ সাল থেকে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।  

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলা অবৈধ এবং নির্বিচারে, যা বেসামরিক মানুষের জীবন ও অবকাঠামো ধ্বংস করছে।  

ব্লকেড ও মানবিক সংকট

ইসরায়েলের চলমান অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়ক মার্টিন গ্রিফিথস জানিয়েছেন, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, হাসপাতালগুলো আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।  

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, এ হামলার লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা। তবে, হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।  

গাজার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের হামলা ও অবরোধের কারণে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাঁবুতেও আমরা নিরাপদ নই।

এ হামলার ফলে গাজার মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার পথ খোলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

সবার দেশ/কেএম