Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩০, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে

পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে ভারতীয় বিএসএফ সদস্য আটক 

পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে ভারতীয় বিএসএফ সদস্য আটক 
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী পাকিস্তান রেঞ্জার্স ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর এক জওয়ানকে আটক করেছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২৩ এপ্রিল) ১৮২নং ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল পিকে সিং অসাবধানতাবশত পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। তিনি সামরিক পোশাকে ছিলেন এবং তার হাতে রাইফেল ছিলো। স্থানীয় কৃষকদের সহায়তার সময় ছায়ায় বিশ্রামের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ভুলবশত সীমান্ত পেরিয়ে যান। পাকিস্তান রেঞ্জার্স তাকে আটক করে।

বিএসএফ ও পাকিস্তান রেঞ্জার্সের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং চলছে এবং জওয়ানকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের ঘটনা অতীতে বেশ কয়েকবার ঘটেছে এবং সাধারণত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। তবে, বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনার কারণে এ ঘটনা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

পাহেলগাম হামলার পর উত্তেজনা

এ ঘটনার পটভূমিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পাহেলগামে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বুধবার ভারত ঘোষণা করে যে, তারা ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদী পানি চুক্তি স্থগিত করবে, পাকিস্তানিদের জন্য সার্ক ভিসা ছাড় প্রকল্প (এসভিইএস) বাতিল করবে এবং পাকিস্তানের সামরিক উপদেষ্টাদের ভারত থেকে বহিষ্কার করবে। এছাড়া, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের ঘোষণাও দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন করে জানায়, পাকিস্তানিদের কোনো ভিসা দেয়া হবে না। এর জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে, ভারতীয় বিমানের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করেছে এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তান আরও বলেছে, সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারত কোনো পদক্ষেপ নিলে তা যুদ্ধের কারণ হিসেবে বিবেচিত হবে।

বর্তমান পরিস্থিতি

পাহেলগাম হামলার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে, যা পাকিস্তান অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার বলেছেন, হামলার বিষয়ে ভারতের অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই।

বিএসএফ জওয়ানের আটক হওয়ার ঘটনা এ উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে, বিশেষ করে যেহেতু এটি পাহেলগাম হামলার পরপরই ঘটেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা নতুন করে সামনে এসেছে। বিএসএফ জওয়ানের আটক হওয়া এবং দুই দেশের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ উত্তেজনা নিরসনে কী ভূমিকা পালন করবে, তা এখন দেখার বিষয়।

সবার দেশ/কেএম