Advertisement

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৩:১১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

হাসিনাকে নিয়ে টিউলিপের যত মিথ্যাচার

হাসিনাকে নিয়ে টিউলিপের যত মিথ্যাচার
ছবি: সংগৃহীত

টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছিলেন, তার খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চেয়েছেন। তাদের মধ্যে কখনোই বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কথা হয় না। তিনি শুধুই ব্রিটিশ নাগরিক, বাংলাদেশের কেউ নন।

কিন্তু স্কাই নিউজ প্রকাশ করেছে , বৃটেনের সিটি মন্ত্রীর লেখা একটি ব্লগে তিনি রাজনৈতিকভাবে হাসিনার কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তা নিয়ে গর্ব করেছেন এবং তাদের একসঙ্গে ছবিও প্রকাশ করেছেন। ২০০৮ সালের শেষের দিকে এবং ২০০৯ সালের প্রথম দিকে লেখা পোস্টগুলোতে যখন তিনি একজন লেবার কর্মী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে তার খালার সঙ্গে প্রচারণা চালানো এবং তার বিজয় উদযাপনের বর্ণনা দিয়েছেন। 

স্কাই নিউজের প্রতিবেদনটি টাইমস-এর একটি নতুন প্রতিবেদনের সাথে মিলে যায়। যেখানে বলা হয়েছে, টিউলিপের লেবার পার্টির সদস্যদের ঢাকার প্রাসাদে দেখা গিয়েছিল। গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে এ প্রাসাদেই থাকতেন তার খালা শেখ হাসিনা।

২০০৯ সালের ১১ জানুয়ারি ‘টিউলিপ সিদ্দিক, ব্লুমসবারি এবং কিংস ক্রসের লেবার পার্টি অ্যাকশন টিমের সদস্য’ শিরোনামের ব্লগটিতে সমর্থকদের উদ্দেশে টিউলিপ লিখেছেন, আমি বাংলাদেশে সত্যিই ব্যস্ত ছিলাম....আমি ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার নির্বাচন-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের ছবি তুলেছি। আমার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ উপাদান ছিল শেখ হাসিনার বক্তব্য। যিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে দেশের কল্যাণে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এটা কোনও গোপন বিষয় নয় যে, অতীতের সরকারগুলো অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে একসঙ্গে কাজ করেনি এবং আমাদের এ ধারা পরিবর্তন করতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ সমর্থন করে না। আশা করি যে এ বছর একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হবে।

সেসঙ্গে টিউলিপ যোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রেস কনফারেন্সে আমার একটি অ্যাকশন শট রয়েছে। আমি কী বলছিলাম তা মনে নেই, সম্ভবত এটি ততটা আকর্ষণীয় ছিল না।

২০০৯ সালের ২১শে জানুয়ারি একটি পোস্টে যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রী(টিউলিপ সিদ্দিক) লিখেছিলেন, নির্বাচনের দিনে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার গাড়িতে ভ্রমণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী!) ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় যান। গাড়ি থেকে নেমে সংসদীয় প্রার্থী এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন। 

তার খালার গাড়িতে ভ্রমণের বর্ণনা দিয়ে টিউলিপ লিখেছেন, আপনি এখানে নির্বাচনের দিন থেকে আমার সমস্ত ছবি দেখতে পাবেন... কিছু ছবির খারাপ মানের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি তার গাড়ির ভেতর থেকে ছবি তুলছিলাম যা আসলে বেশ কঠিন কাজ ! আপনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি ছবিও দেখতে পাবেন। আমি ছবিটি তুলেছিলাম কারণ শেখ হাসিনা আমাকে বলেছিলেন যে, এ কারাগারটিতে তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কেটেছে। কার্যত এটি ছিল তার দ্বিতীয় বাসা। কারণ তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহু বছর ধরে এ কারাগারে আটক ছিলেন। প্রতি সপ্তাহান্তে পরিবারের বাকি সদস্যদের সাথে খালা তাকে দেখতে আসতেন, তাই এটি একটি খুব পরিচিত ল্যান্ডমার্ক ছিল। 

এর আগে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘বিজয়!’ শিরোনামে সিদ্দিক লিখেছিলেন, আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জিতেছে! শেখ হাসিনা নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী! আমি আনন্দিত! আমি সারাদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রচারণায় ছিলাম তাই বেশি কিছু লেখার শক্তি আমার নেই, কিন্তু আগামীকাল আমি লিখবো। তবে, আমি কয়েকটি ছবি আপলোড করা থেকে নিজেকে থামাতে পারছি না। 

একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা- এটি হলো শেখ হাসিনার মুখ, ফলাফল শোনার ঠিক আগে। ওই আসনে আওয়ামী লীগের কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে শুনে তিনি এখানে এসেছেন।

দ্য টাইমস রিপোর্ট করেছে যে, স্যার কিয়ের স্টারমারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের প্রথম রাজনৈতিক জীবনের খণ্ডচিত্র ঢাকায় সুরক্ষিত প্রাসাদে ধুলো ও ধ্বংসাবশেষের মধ্যে চাপা পড়ে গেছে। একটি সিঁড়ির ওপরে   হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্নের এমপি হিসাবে তার নির্বাচনের পর স্থানীয় লেবার পার্টির সদস্যদের উদ্দেশে লেখা সিদ্দিকের একটি ধন্যবাদ নোট ছিল।

সবার দেশ/কেএম