খুনি হাসিনার জুলাই গণহত্যা
৬ মাস পর ছেলের লাশ পেলেন মা

গত ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে প্রাণ হারান মো. হাসান (১৯)। এরপর পাঁচ মাসের বেশি সময় তার মরদেহ পড়ে ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে।
গত ১২ জানুয়ারি তার মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার। ডিএনএ পরীক্ষায় গত বুধবার হাসানের পরিচয় নিশ্চিত হয়। এরপর থেকে তার মা গোলেনুর বেগমের কান্না যেন থামছেই না।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ পরিবারের কাছে তুলে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সন্তানের মরদেহ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসানের মা গোলেনুর বেগম। এ সময় পাশেই ছিলেন তার বাবা মো. মনির হোসেন। অশ্রুজড়িত কণ্ঠে ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন তিনি।
মনির হোসেন বলেন, আমার ছেলে ৫ আগস্ট হারিয়ে যায়। পরে তাকে আমরা প্রায় সব হাসপাতাল, ক্লিনিক, কবরস্থান, আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ আমাদের পক্ষ যত জায়গায় যাওয়া সম্ভব, সবখানে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও তাকে পাইনি। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যাই এবং কাপড়চোপড় দেখে ছেলেকে শনাক্ত করি।
ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে মনির হোসেন আরও বলেন, আমি চাই আমার মতো কোনো বাবাকে যেন এভাবে তার সন্তান না হারাতে হয়। আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।
হাসানের খালা মোছা. শাহিনুর বলেন, ড. ইউনূসের সরকারের কাছে ভাগ্নে হত্যার বিচার চাই। তাদের পরিবারের সে ছিল আয়ের অন্যতম উৎস। তাকে ছাড়া তার বাবা–মা কীভাবে বেঁচে থাকবে?
সাত মাস মর্গে পড়ে থাকার পর ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন এলাকায়। আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে দ্বিতীয় জানাজা শেষে ভোলা সদর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ দাফন করা হবে।
হাসান রাজধানীর কাপ্তানবাজারে একটি দোকানে কাজ করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জানাজা পড়ে শহীদ হাসানের কফিন নিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘কফিনমিছিল’ বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সবার দেশে/এমকেজে