কুলো, হাঁড়ি, হাতপাখা, দইয়ের হাঁড়িতে লিখে বর্ষবরণ
বৈশাখী ছোঁয়ায় সাজান অন্দরমহল
আধুনিক ঘরেও থাকে সাবেক সাজ। থাক নিজস্বতা। বর্ষবরণে কুলো, হাতপাখা, রজনীগন্ধায় কেমন হবে গৃহের সাজ?

বছরের অন্যান্য দিনের মতো নয় পহেলা বৈশাখ। রেস্তোরাঁর মেন্যু থেকে পোশাক, পাতে পদ আর ঘরের সাজ—সব কিছুতেই চাই সাবেকি বাঙালিয়ানা। আধুনিক অন্দরসজ্জার ফাঁকেও যদি থাকে একটুখানি মাটির গন্ধ, কুলোর রং, পাখার নকশা, রজনীগন্ধার সুবাস—তবেই তো জমবে নববর্ষ।
রঙিন কুলোয় শুভেচ্ছা
বাড়ির আনাচে-কানাচে পড়ে থাকা কুলোই হয়ে উঠুক আপনার ক্যানভাস। প্রথমে কুলোটিকে সাদা বা হলুদ রং করে নিন। শুকিয়ে গেলে গাঢ় রঙে বর্ডার দিন, আর মাঝখানে লিখুন—‘শুভ নববর্ষ’, ‘এসো হে বৈশাখ’, অথবা আঁকুন দোয়েল, লতা-পাতা, টিপ ফর্মার আলপনা। সরু তুলিতে সাদা বা লাল রং ব্যবহার করলেই জমবে।
হাতপাখার নতুন রূপ
নানারঙা হাতে আঁকা পাখা যেন দেয়ালের কবিতা। পুরনো লাল গামছা বা ফিতা কেটে কুঁচি করে সাঁটিয়ে দিন পাখার চারপাশে। মাঝারি মাপের একটিতে লিখুন ‘এসো হে বৈশাখ’, পাশে সন দিন। তিনটি পাখা কৌণিকভাবে উপরে-নিচে সাজালে দেয়াল হয়ে উঠবে উৎসবের খাতা।
দইয়ের হাঁড়িতে ফুলের খেলা
খুঁজলে এখনও মাটির হাঁড়ি পাওয়া যায়। হাঁড়ির গায়ে লাল রং আর সাদা আলপনায় আঁকুন কিছু। তারপর ভরে দিন পানি, তার উপর ভাসিয়ে দিন বেলফুল, জুঁই, রজনীগন্ধা। অন্দরমহলে ফুটে উঠবে এক টুকরো শুদ্ধতা।
‘শুভ নববর্ষ’ হোক দেয়ালে
বাড়ির ছোটদের আঁকার খাতায়ই হোক নববর্ষের বার্তা। অথবা অনলাইন থেকে আনিয়ে নিন ‘উডেন সাইন’। স্কেচপেনে লিখুন ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩২’, কিংবা রবীন্দ্রনাথের পঙক্তি। হুক দিয়ে ঝুলিয়ে দিন বারান্দায় বা বসার ঘরের দরজায়।
অন্দরেই থাক হালখাতা
আপনি যদি ব্যবসায়ী না-ও হন, তবুও পুরনো ডায়েরি মেলে দিন লাল শালু কাপড়ে। জরি দিয়ে বাঁধলে জমবে। রাখুন এক পাশে, যেন এও হয়ে ওঠে উৎসবের এক প্রতীক।
সব শেষে রজনীগন্ধা চাই
রঙ, আঁকিবুকি, সাজ—সব কিছু থাক, তবে বর্ষবরণের দিনে যদি ঘরে না থাকে টাটকা রজনীগন্ধা, তবে যেন কিছু অপূর্ণ থেকে যায়।
একটু সময় দিন, খানিকটা ভালোবাসা ঢালুন। দেখবেন, আপনার ঘরটাই হয়ে উঠেছে বৈশাখের সবচেয়ে আপন ঠিকানা।
সবার দেশ/কেএম