চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেফতার ৪

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনার মামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চাকু, দেশীয় অস্ত্র, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়। শনিবার সকালে মির্জাপুর থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গতকাল ওই বাসের ভুক্তভোগী যাত্রী ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা ওমর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আট-নয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নাটোরের বড়াইবাড়ির উদ্দেশ্যে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস (রেজিস্ট্রেশন নম্বর ময়মনসিংহ-ব-১১-০০৬১) পরিবহন রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ওই সময় গাড়িতে ৩০/৩৫ জন যাত্রী ছিলো। পরে রাত ১২টার দিকে হেমায়েতপুর থেকে আরও ১০/১২ জন যাত্রী ওঠে। এরপর রাত ১টার দিকে চন্দ্রা বাইপাসে চা বিরতি দেয়।
বিরতি শেষে বাস ছাড়ার সময় সেখান থেকে আরও ৩/৪ জন যাত্রী ওঠে। গাড়িটি রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কালিয়াকৈর হাইটেক সিটি পার্কের পাশে ফ্লাইওভার অতিক্রম করার পর বাসের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ৮/৯ জন ডাকাত একসঙ্গে দাঁড়িয়ে যায়। এসময় তারা চাকু, চাপাতিসহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের চুপ থাকতে বলে।
বাসচালকের গলায় চাকু ধরে ড্রাইভিং সিট থেকে তুলে নিয়ে ডাকাতদের একজন চালকের আসনে বসে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে যায়। এরপর মির্জাপুর এলাকার সোহাগ পাড়া এলাকায় এসে যাত্রীদের কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, টাকা পয়সা, মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এসময় কয়েকজন নারী যাত্রীদের স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করে শ্লীলতাহানি করে।
পরে বাসটি উল্টোদিকে টার্ন নিয়ে গাজীপুর এলাকায় কয়েকবার চক্কর দিয়ে আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে নন্দন পার্কের কাছে নেমে যায়। এরপর ড্রাইভার আবার রাজশাহীর দিকে রওনা দেয়। গাড়িটি নাটোরের বড়াইগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে গাড়ির স্টাফরা জড়িত থাকতে পারে এ সন্দেহে বড়াইগ্রাম থানাকে যাত্রীরা জানালে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-বাসের চালক রাজশাহীর বোয়ালিয়ার শাহ মাখদুম কলেজ এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সাধুর মোড় এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে সুমন ইসলাম (৩৩) এবং সহকারী পূর্ব কাঁঠালিয়া এলাকার আঙুর মণ্ডলের ছেলে মাহবুব আলম (২৮)।
এদিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম থানার এসআই শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চালানমূলে ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু আলী, সুপারভাইজার সুমন ইসলাম ও সহকারী মাহবুব আলমকে বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাদের আদালতের সামনে হাজির করলে আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন।
সবার দেশ/কেএম