বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
৫ লাখ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ব্যাংক থেকে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে জানান, দেশের ব্যাংকিং খাতে পাঁচ লাখ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ ও অর্থপাচার হয়েছে। এর মধ্যে শুধু একটি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীই পাচার করেছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ে আয়োজিত ‘অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও সমসাময়িক ব্যাংকিং ইস্যু’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
গভর্নর বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত এখন মানি লন্ডারিংয়ের বড় ভিকটিম। কিছু প্রভাবশালী গ্রুপ ও পরিবার সুপরিকল্পিতভাবে টাকা পাচার করে দেশের বাইরে নিয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, মোট পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা। এর বাইরে অভ্যন্তরীণ জালিয়াতি ও ঋণ আত্মসাৎ মিলিয়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ লাখ কোটি টাকায়।
গভর্নর মনসুর বলেন, আমরা জানি কারা এসব করছে। চট্টগ্রামের একটি বড় গ্রুপ দেড় লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে—এটা কোনও গুজব নয়। বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থে কেনা সম্পদ জব্দে আমরা ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই আমরা কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, যদি কোনও ব্যাংক কর্মকর্তা লুটপাটে সরাসরি জড়িত থাকেন, প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে শুধুমাত্র অনুমানভিত্তিক অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।
গভর্নর জানান, রফতানি বাড়ছে, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। শেয়ারবাজার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্থিতিশীল। নিয়মিত এলএনজি আমদানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনও স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ভারসাম্য ফেরানোই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, পরিচালক মো. আনিসুর রহমান এবং চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন। উপস্থাপনায় ছিলেন উপ-পরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।
সবার দেশ/এমকেজে