Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ প্রফেসর মো. আমির হোসেন


প্রকাশিত: ০০:২২, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

উপন্যাস

বঞ্চিত কৃষক

বঞ্চিত কৃষক
ছবি: সবার দেশ

(৫ম পর্ব)

মেঘনায় এখন আগের খেলা নেই। সবাই খেলে কিন্তু যন্ত্রে। যেই মাঠে এই সময়ে ঘাসের অস্তিত্ব থাকতো না! সেই মাঠ এখম দখল করে নিয়েছে ঘাস। ঘাসই প্রমাণ করে বর্তমান প্রজন্ম শারীরিক পরিশ্রমের খেলা খেলে না! ওরা যন্ত্রের জাদুতে মগ্ন। ফজর আলী যন্ত্র বুঝে না। সে বুঝে লাঙল জোয়াল। তাও টিকবে কি-না জানে না।

ইদানিং ট্রাক্টর এসেছে। সবাই সেখানে ঝুঁকলেও ফজর আলী লাঙল জোয়াল নিয়েই আছে। হুহু করে মানুষ বাড়ছে কিন্তু মানুষ কায়িক শ্রম দেয় না। ফজর আলীর শৈশব এখন যেন রূপকথা। দেশীয় ফসল কমছে, সাথে স্বাদও। হাইব্রিডে ভরে যাচ্ছে সব। মানুষের চক্ষুলজ্জা নেই। ঠকাতে পারলেই নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবে। সামান্য লাভের জন্য বড় মিথ্যে বলতেও ছাড়ে না। মৃত্যুর ভয় নেই। তাদের কাছে নিজের জয়ই বড়। সেটা যেভাবেই হোক। 

সখিনা তাকে বিশ্বাস করে, সেও সখিনাকে। ছেলেমেয়ে তাদের বড় অবলম্বন। ছেলেমেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হলে বাবা-মায়ের সম্মান বাড়ে। ফজর আলী তা আশা করে। আশা সবাই করে। পরকাল নিয়েও মানুষের আশা। তবে ফজর আলী সখিনাকেই চায়! সখিনার বিকল্প বেছে নেয়ার সুযোগ নেই। ইহকাল পরকালেও ফজর আলী তার। বড্ড ভালো মানুষটা! চরে থাকলেও সে ভালোবাসার তাজমহল গড়ে। সখিনামহল হলে ঐতিহাসিক হতো। কিন্তু সখিনা নামের ঐতিহাসিক প্রেম নেই। শাহজাহান তাজমহল গড়েছে৷ রাজারা প্রজার ধনে মাতব্বরি করে। নিজের ইনকামে করলে না হয় হতো। কিন্তু জনগণের টাকায় করেছে। তাজমহলের অংশীদার বর্তমানের বাঙালিও। তাদের পূর্ব পুরুষদের টাকায়ই তাজমহল তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক দাবি করলে কি পাওয়া সম্ভব? লজিক তো বলে দাবি সঠিক!

ফজর আলী সাধারণ কৃষক। সে রাজনীতি বুঝে না। কে রাজা তা সে জানে না! সে জানে বেঁচে থাকতে, কৃষিকাজ করতে। এলাকার চেয়ারম্যানকে চিনে। ভোট এলে ভোটও দেয়। জাতীয় নির্বাচনে ছেলে যা বলে দেয়, তাকেই ভোট দেয়। গণতান্ত্রিক দুর্বলতা এটা। যে টাকায় বিক্রি করে তার ভোট আর সচেতন মানুষের ভোটের মর্যাদা সমান! (চলবে,,,)

লেখক: কবি, কথাসাহিত্যিক ও গীতিকার