উপন্যাস
বঞ্চিত কৃষক

(৮ম পর্ব)
টিকটিক করে সময় বয়ে যায়। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। অঘচ মানুষ সময়ের চিন্তা করে না। তার পরিকল্পনা ভবিষ্যৎমুখী। কাল বাঁচবে কিনা জানে না। তবুও সে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে। আশা মানুষের সম্পদ।
হঠাৎ পিপাসের বিয়ের প্রস্তাব আসে। পাশের গ্রামেরই ছেলে। চমকে উঠে ফজর আলী। কত দ্রুত সময় চলে যায়। এই তো সেদিন মেয়েটার জন্ম হলো। অথচ, আজ বিয়ের প্রস্তাব। বাবা-মা এর কাছে সন্তান কখনোই বড় হয় না। বর্তমান যুগের মেয়রা কেমন যেন। ভুলে যায় নিজের অস্তিত্ব। ভাবে স্বামীর সবকিছুতে স্ত্রী ও সন্তানের অধিকার। শ্বশুর শাশুড়ির অধিকার নেই। কীভাবে সম্ভব?
বাসর ঘরে স্বামী সৃষ্টি হলেও। স্বামীরও জন্ম হয়েছে, তার শৈশব কৈশোর গিয়েছে। বাবা-মা মানে শ্বশুর শাশুড়ি বহু ত্যাগ করে বড় করেছে। আজ সে যেভাবে নিজের সন্তানকে বড় করছে। একদিন যদি ছেলের বউ এসে বলে, আপনার কোন অধিকার নেই! কেমন লাগবে? বিবেচনাই সব!
আমার মতে বর্তমানের ছেলেরাই মেরুদণ্ডহীন। যার কারণে বউগুলো এত ক্ষমতাবান। অত্যাচার করে শ্বশুর শাশুড়িকে। ছেলের সামনেই যদি ছোটখাটো অপমান করে। তবে ছেলের অবর্তমানে কী বলে? একদিন তো তারাও শ্বশুর শাশুড়ি হবে। তখন? তার সন্তান যা দেখছে তা কি করবে না। না-কি তাদের সন্তান হবে ফেরেশতা। আশাকরি, একটু ভাবনায় রাখবে সবাই। ফজর আলী কৃষক। সখিনা তার।
ফজর আলী ভাবে, তার ছেলে সুজন বিয়ে করলেও কি মেরুদণ্ডহীন হবে। ছেলের বউ সব কিছু তাকে বলবে? তাকে বা সখিনাকে অপমান করবে? সে ও সখিনা করেনি! কিন্তু বর্তমান জমানা কেমন যেন। পাল্টে গেছে সব!
পুরুষ অনেক সহনশীল। পুরুষের এটাকে ব্যবহার করে নারী মানে এ যুগের ছেলের বউয়েরা। কৃষক বরাবরই বঞ্চিত। কৃষককে শোষণ করে উচ্চশিক্ষিত জ্ঞানপাপীরা। বীজ সার থেকে শুরু করে সর্বত্র শোষণ। ইদানিং কীটনাশকেও ভেজাল। তাদের খেয়ালিতে কৃষকের মাথায় হাত! (চলবে,,,)
লেখক: কবি, কথাসাহিত্যিক ও গীতিকার