প্রবন্ধ
জান্নাতি পাথর

হাজীদের কাছে সবচেয়ে সুপরিচিত পাথর হাজরে আসওয়াদ বা জান্নাতি পাথর। কা'বা শরীফের দরজা বরাবর মুখ করে দাঁড়ালে বাম কোণে একটি কালো পাথর সংরক্ষিত অবস্থায় দেখা যাবে। এই সংরক্ষিত কালো পাথরটির নামই হাজরে আসওয়াদ। বর্তমানে পাথরটির রং কুচকুচে কালো। এক সময় পাথরটির রং দুধের মতো সাদা ছিলো। দুধের মতো সাদা পাথরটি মানুষের কলংক-কালিমা মোচন ও শোষণ করতে করতে কৃষ্ণ বরণ ধারণ করেছে। কারণ, রাসূল (স.) স্বয়ং এ পাথরে চুম্বন করতেন। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.) এ পাথরে চুম্বন দেন এবং বলেন-
‘আমি জানি তুমি পাথর মাত্র। তোমার লাভ-লোকসানের কোনও ক্ষমতা নেই। আমি যদি নবীজিকে তোমায় চুম্বন দিতে না দেখতাম তা হলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না।’
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল (স.) বলেছেন, ‘হাজরে আসওয়াদ যখন জান্নাত থেকে নেমে আসে তখন দুধের চেয়েও সাদা ছিলো। কিন্তু আদম সন্তানের পাপ তাকে কালো করে দেয়।’ (তিরমিযী-৮৭৭)'।
ইবনে আব্বাস (রা.) কর্তৃক আরো বর্ণিত আছে, রাসূল (স.) আরো বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি কিয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদকে দুটি চোখ ও একটি জিহবা সম্পন্ন অবস্থায় হাজির করবেন। চোখ দু’টি দ্বারা দর্শন ও জিহবা দ্বারা কথা বলবে এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে ঈমানের সাথে তাকে চুম্বন দিয়েছে তার পক্ষে এ পাথর সাক্ষ্য দিবে।’
আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা.) কসম করে বলেছেন, আমি রাসূল (স.)-কে বলতে শুনেছি ‘হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইব্রাহীম এ দু’টি জান্নাতের জ্যোতির্ময় পাথর ছিলো। আল্লাহ যদি এ দু’টি পাথরের জ্যোতি বিলুপ্ত না করতেন তা হলে আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে অথবা পশ্চিম ও পূর্ব দিগন্তে যা আছে সবই আলোকিত করে দিতো।’ (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ-২৭৩১)'।
এ পাথর স্বর্গীয় পাথর, এ পাথর পৃথিবীতে অবতরণ সম্পর্কে বর্ণিত আছে-
ইব্রাহীম (আ.) কা'বা নির্মাণ কাজ শেষ করতে গিয়ে একটি পাথরের অভাব বোধ করেন। একটি পাথরের অভাবে একটি স্থান খালি থেকে যায়। ইসমাঈল খালি স্থানটি পূরণ করার জন্য খালি স্থানের পরিমাণ মতো আকারের পাথর খুঁজতে শুরু করেন। কিন্তু কোনো পাথরই মিল হচ্ছিলো না। তখন ইব্রাহীম বলেন-
আমি তোমাকে যে রকমের পাথর আনতে বলেছি তুমি সে রকমের পাথর খুঁজে নিয়ে এসো?
ইসমাঈল সে রকম সাইজের পাথর খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর পাথরসহ ফিরে এসে দেখেন খালি জায়গায় তার বাবা পাথর স্থাপন করে ফেলেছেন। তখন ইসমাঈল (আ.) জানতে চান-
আব্বাজান, এ পাথর কে নিয়ে এসেছেন?
ঐ ব্যক্তি নিয়ে এসেছেন, যে ব্যক্তি তোমার নির্মাণ কাজের মুখাপেক্ষী নন। এটি জিবরাঈল (আ.) স্বর্গ থেকে নিয়ে এসেছেন।
প্রাক ইসলামী ঐতিহাসিক নানা বর্ণনাসূত্রে জানা যায়, আদিপিতা হযরত আদম (আ.) কর্তৃক কা’বার দ্বিতীয় স্তরের নির্মাণকালে পরওয়ার দেগার পাপ পরিশোধক পরিশুদ্ধ পরশ পাথরটি প্রথমবার পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রেরণ করেছিলেন। কা’বা গৃহের জন্য প্রেরিত পাথরটি উঠিয়ে নিয়েছেন হযরত নূহ (আ.)-এর সময় মহাপ্লাবনের প্রাক্কালে। পাথরটি শেষ বারের মতো পাঠানো হয় তৃতীয় স্তরের নির্মাণকাল হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর সময়। আল্লাহর নির্দেশে প্রত্যেক বার পাথর আনা-নেয়ার কাজটি করেছেন জিবরাঈল (আ.)।
সৃষ্টির পর থেকে কালে কালে যেমন কা’বা গৃহের সম্মানহানির চেষ্টা চলছে, তেমন ঘৃণ্য অপতৎপরতা চলছে জান্নাতি পাথরকে নিয়েও। কারবালা হত্যাকান্ডের পর ফাতেমী সম্প্রদায় তীব্র শোক ও আক্রোশে মরিয়া হয়ে ওঠে আর এই সুযোগে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত কিছু লোক সুবিধা প্রাপ্তির মোহে ফাতেমী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও মূল্যকে হাতিয়ার বানিয়ে কারবালার শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে বিদ্রোহ শুরু করে। ইসলামী রাষ্ট্রের শাসকের সাথে বিদ্রোহ করতে গিয়ে এক সময় ইসলামের মূলধারার সাথে বিদ্রোহ শুরু করে দেয়।
ইসমাঈলিয়া নামে বিদ্রোহী সম্প্রদায়টি ভ্রান্ত মতবাদকে এজেন্ডা করে খোজিস্থানের অধিবাসী হামদান কারামাতার নেতৃত্বে অল্পদিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। অগ্রাভিযান কালে অনেক খুন-খারাবিসহ ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সময় কারামাতা নিহত হয়। কারামাতা নিহত হওয়ার পর হিজরী ৩১২ সালে আবু তাহের ইবনে হাসান ইবনে বার্রাম জুন্নবী কারামাতা দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করে। জুন্নবী হিজরী ৩১৭ সালে ৮ই জিলহজ হত্যাকান্ড ও ধ্বংসাত্মক তৎপরতাসহ পবিত্র কা’বাগৃহে প্রবেশ করে। জুন্নবী কা’বা গৃহের পবিত্র গেলাফ এবং বহু মূল্যবান দ্রব্যাদিসহ জান্নাতি পাথরটিও লুট করে নিয়ে যায়।
জান্নাতি পাথর লুট করে নিয়ে যাওয়ার খবর মুসলিম জাহানে ছড়িয়ে পড়লে কারামাতা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিম সমাজ তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও ঘৃণায় ফেটে পড়ে। ক্ষোভ ও ঘৃণা বাড়তে বাড়তে বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে পড়লে হিজরী ৩৩৯ সালে জান্নাতি পাথরটি ফিরিয়ে দেয়া হয়। ফিরে পাওয়া জান্নাতি পাথরটি দীর্ঘ ২২ বছর পর যথাস্থানে পুনঃস্থাপন করা হয়। হাজী সাহেবগণ বাইশ বছর পবিত্র পাথর হাজরে আসওয়াদ বা জান্নাতি পাথর বিহীন অবস্থায় হজব্রত পালন করেছেন। জান্নাতি পাথর পুনঃস্থাপনের পর পাথর চুম্বন করার জন্য হাজীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়।
উপরে উল্লেখিত কারণ ও বর্ণনার প্রেক্ষিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ কালো পাথর চুম্বন করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। জীবনের সকল পাপ শোষণকারী পবিত্র পাথর ‘হাজরে আসওয়াদ' চুম্বন করতে না পারলে কলবের কলংক-কালিমা মোচন হবে না। এ ধারণা আমাদেরও ছিলো। আর এ ধারণার বশবর্তী হয়েই তওয়াফকারীদের মতো জান বাজি রেখে অত্র পাথর চুম্বন করতে উজ্জীবিত হয়েছিলাম। আমাদের মতোই অনেক হাজী জীবনপণ করে পাথরের কাছে যাওয়ার জন্য বৃদ্ধ, নারী-শিশুদের চেষ্টারত দেখেছি। তা করতে গিয়ে মহিলা, অসুস্থ ব্যক্তি, অনেকে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে পড়ে। ক্রমবর্ধমান দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এ পাথরের কাছে ডান্ডা নিয়ে সর্বদা পুলিশ দন্ডায়মান থাকে।
এ রকম ধারণার কথাও শোনা যায়, যারা ভাগ্যবান তারাই শুধু এ কালো পাথরে চুম্বন করার সুযোগ পায়। যাদেরকে আল্লাহ পছন্দ না করবেন তারা কোনোভাবেই এ পাথরে চুম্বন করার সুযোগ পাবে না। ফলে আল্লাহ যাদের পাপ মোচন করতে মনঃস্থির করেন শুধু তাদেরই পাথরে চুম্বনের সুযোগ করে দেন। এই ধারণাটি আমার মনে বদ্ধমূল না হলেও আমার গিন্নীর মনে বদ্ধমূল হয়েছিলো। কা’বা শরীফের মাঠের পাশের গাজা এলাকায় হোটেল ‘দ্বার আবু তুর্কী’তে আমরা ছিলাম। এখান থেকে যখন তখন কা’বার কাছে যেতে পারতাম। শুধু পাথরে চুম্বনের আশায় সুযোগের সন্ধান খুঁজতাম। জনবিরল সময় রাত তিনটাসহ দিনের বিভিন্ন সময় হাজরে আসওয়াদের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করেছি। এতো অধ্যবসায়ের পরেও চুম্বন করা দূরের কথা ছুঁয়ে দেখারও সুযোগ ছিল না। কা’বা প্রদক্ষিণকালে কা’বার দিকে ঘেষতে ঘেঁষতে একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গেলাফের তলা দিয়ে কা’বা ঘরের দেয়াল ছুঁতে পেরেছিলাম। একবার রাত দুটায় আমার ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙলে দেখি আমার গিন্নীর বিছানা শূন্য। তা দেখে মোটেও ভীত হইনি। কারণ, ইতোমধ্যে গিন্নী একা একা চলাফেরা রপ্ত করে ফেলেছিলো। রাত তিনটার দিকে ফিরে এসে গিন্নী জানালো-
-এবারও পারলাম না।
কি পারলে না?
পাথরটা ছোঁয়ার জন্য এতো রাতে গিয়েও ছুঁতে পারলাম না। কেউ কেউ পাথরের কাছে গিয়ে মরণ কামড় দিয়ে কাঁঠালের আঠার মতো লেপ্টে থাকে। যখন যাই তখনই দেখি মানুষ জট পাকিয়ে পাথরের গায়ে লেপ্টে রয়েছে। জট খুলতে পুলিশ লাঠিপেটা করে। পুলিশের প্রচন্ড লাঠিপেটার ভেতর দিয়েই কেউ কেউ পাথরের গায়ে নিজের গা ঠেকাতে চায়। আল্লাহ যাকে পছন্দ করে তাদের পক্ষেই পাথর ছোঁয়া সম্ভব হয়।
-আমার মনে হয় তোমার এ ধারণা ঠিক নয়। বর্তমান পর্যায়ে শতকরা ৯৯ জনের পক্ষে পাথর চুম্বন করা দূরের কথা স্পর্শ করাই সম্ভব হয় না। যে ক’জনকে পাথরের পাশে লেপ্টে থাকতে দেখেছি সে ক’জনের অধিকাংশই নাইজেরিয়ান কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। আমি যতোবার গিয়েছি ততোবারই ঐ কুচকুচে কালো নিগ্রো যুবকদের পাথরের পাশেসহ হাজরের ভেতর সুপারগ্লুর মতো লেপ্টে থাকতে দেখেছি। এতে এই বুঝায় না যে, আল্লাহ শুধু নাইজেরিয়ান নিগ্রো যুবকদের পছন্দ করেন। পাথর ছুঁতে পারা না পারার সাথে আল্লাহর ইচ্ছা-অনিচ্ছার যোগসূত্র থাকলে তবে কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক হাজীকে পাথর ছোঁয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা না করে এভাবে পাথরের কাছে ডান্ডা দিয়ে দাঙ্গা পুলিশ দাঁড় করিয়ে রাখতেন না। বাংলাদেশে আমরা যারা পান থেকে চুন খসতে দেখলে যেভাবে জান দিয়ে দিই, পৃথিবীর আর কোনো দেশে এভাবে জান দিতে দেখি না। আরবসহ অনেকের কাছে ধর্মটা রুটিন ওয়ার্কের মতো। ধর্মসহ সবকিছুতেই যেনো আমরা বেশি বাড়াবাড়ি করে থাকি। তা ছাড়া এ পাথর ছোঁয়া বা চুম্বন করা যদি একান্তই বাধ্যবাধকতার পর্যায়ে পড়তো তবে হজ্জের অপরাপর বাধ্যবাধকতা মূলক কাজের মতো এ কাজটি করার জন্যেও সরকারিভাবে সুযোগ করে দেয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। সব দিক বিবেচনা করে বুঝতে পারি- তোমার ধারণা সঠিক নয়।
আমরা একবার দক্ষিণ এলাকা দিয়ে কা’বা মসজিদ ভবনের ছাদের উপর উঠে মূল কা’বা ঘরের উপরের অংশ দেখার ভাগ্য হলেও কৃষ্ণ পাথর চুম্বনের ভাগ্য হয়নি। হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে শত প্রকারের প্রচেষ্ট সত্বেও স্বর্গীয় পবিত্র পাথরটি চুম্বন কিংবা ছুঁয়ে দেখতে না পারার কারণে কারো কারো মনের ভেতর খুঁতখুঁতি থেকেই যায়। বিষয়টি আল্লাহ পাক কিভাবে নেন তা আল্লাহ পাকই ভালো জানেন।
বোখারী শরীফের ৮৪৬ নং হাদীছের আলোকে বর্ণিত আছে যে, পবিত্র কালো পাথর চুম্বনের বিষয়ে এক ব্যক্তির এক প্রশ্নের উত্তরে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি দেখেছি রাসূল (সা.) উহাকে ভক্তি ও মহব্বতের সহিত চুম্বন করতেন। ঐ ব্যক্তির পুনঃ প্রশ্ন, বলুনতো যদি ভিড় হয়, কিংবা যদি চুম্বন করতে কষ্ট হয় তবে কি করবো? এর উত্তরে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) রেগে গেলেন, রাগান্বিত স্বরে বললেন ‘আমি দেখেছি, রাসূল (সা.) হাজারে আসওয়াদকে চুম্বন করেছেন’।
বোখারী শরীফের ৮৪৬ নং হাদীছের মাসআলায় বর্ণিত আছে ‘ভিড় থাকা অবস্থায় যথাসাধ্য চেষ্টা করেও হাজারে আসওয়াদ চুম্বনের চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু অন্যকে কষ্ট দিয়ে বায়তুল্লাহ শরীফ ও হাজারে আসওয়াদের সম্মান ও আদবের বরখেলাফ করে চুম্বনের জন্য হুড়াহুড়ি ধস্তাধস্তি করবে না। কারণ, চুম্বন করা সুন্নত এবং ঐ সমস্ত অবঞ্চিত কর্ম হারাম। সুন্নত হাছিলের জন্য হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া যায় না। বিশিষ্ট ওলামা-আলেম মুহাম্মদ মুকাম্মাল হক, কিং সউদ ইউনিভার্সিটি, রিয়াদ সউদী আরব কর্তৃক অনূদিত, শায়েখ সফীউর রহমান মুবারকপুরী সম্পাদিত ‘পবিত্র মক্কার ইতিহাস' গ্রন্থের ১৫৩- ১৫৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-
‘হাজীগণ যখন মসজিদে হারামে পৌঁছবে তখন ডান পা আগে প্রবেশ করিয়ে এই দোয়া পাঠ করা তাদের জন্য সুন্নত- ‘আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি, রাসূলের ওপর আল্লাহর রহমত ও শান্তির ধারা বর্ষিত হোক, সম্মানিত চেহারা ও স্থায়ী রাজত্বের অধিকারী মহান আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, হে আল্লাহ আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা খুলে দিন।’
কা’বার নিকট পৌঁছে তাওয়াফ আরম্ভ করার পূর্বে ‘লাব্বাইক’ বলা বন্ধ করে দিবে। যদি সে তামাত্তু হজ্জ অথবা ওমরাহকারী হয়। অতঃপর ‘হাজরে আসওয়াদ’-এর দিকে গিয়ে তাকে সামনে করে ডান হাতে স্পর্শ করে চুমো দিবে, চুমো দেওয়া যদি সম্ভব না হয় তাহলে হাত দ্বারা স্পর্শ করবে, অথবা অন্য কিছু দ্বারা স্পর্শ করে তাতে চুমো দিবে। এতেও যদি স্পর্শ করা সম্ভব না হয় তাহলে (হাত অথবা অন্য কিছু দ্বারা) ইশারা করবে ও ‘আল্লাহু আকবার' বলবে, তবে যা দ্বারা ইশারা করা হয়েছে তাতে চুমো দিবে না। অতঃপর সাত চক্কর দিবে। প্রথম তিন চক্কর (পাক) ছোট ছোট কদমে আস্তে আস্তে দৌড়াবে। বাকি চার চক্কর সাধারণভাবে চলবে, প্রতিটি চক্করে ‘হাজরে আসওয়াদ’-এর দিক থেকে শুরু করে ‘হাজরে আসওয়াদ’-এ গিয়েই এক পাকের গণনা শেষ হবে।
লেখক: আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক