উপন্যাস
বঞ্চিত কৃষক

(৯ম পর্ব)
পিপাসের বিয়ের প্রস্তাব। ছেলে পাশের গ্রামের। ঢাকায় সরকারি চাকরি করে। উপরি উপার্জন অনেক। মূল বেতনে হাত দিতে হয় না! ফজর আলী ভেবে পায় না উপরি পাওনা কী? তাহলে কি ছেলে ঘুষ খায়? কত যে নাম এসবের! তাদের কোন ডিমান্ড নেই। এই কথা বলেই বিয়ের বিষয়ে বসে।
হঠাৎ ছেলের চাচা বলে, আমাদের কিছু চাওয়ার নেই। কিন্তু সোনার ছেলে। সরকারি চাকুরে। ওর উপযোগী করে সাজিয়ে দিবেন। ছেলের ঘর, সাথে ছেলে চলার জন্য একটা হুন্ডা।
আকাশ থেকে পড়ে ফজর আলী। তাহলে কি পিপাস ফেলনা? ছেলে মানুষ করতে টাকা যায়, মেয়ের পিছনে মেয়ের বাবা-মা এর যায় না? ফজর আলী ভাবছে, যা সম্পত্তি আছে; সব যাবে। গিফট ও বর যাত্রী খাওয়ানো। এ কি করে সম্ভব? সুজনের ভবিষ্যত নষ্ট হবে। ছেলে উপরি নেয় বলে! তাহলে কি সে অমানবিক?তাদের সন্তান যেন এমন না হয়! মেহমানকে পরে জানাবে বলে বিদায় নেয়।
সখিনার মুখোমুখি ফজর আলী। সখিনা স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। হঠাৎ স্বপ্নটা ভেঙে গেলো। তার পিপাসের এই যাত্রায় ঘর হলো না। সমাজ উন্নত হলেও কনের বিবেচনায় হয়নি। এখনও বর কনেকে অপছন্দ করতে পারে। কনে পারে না। বাবা-মা যাকে এনে দেয় সে-ই হয় তার স্বপ্ন-পুরুষ। নতুন করে সংসার পাতে। সন্তান জন্ম দেয়। একসময় সন্তানের বিয়ে দেয়। জাগতিক নিয়ম এটাই
জন্মেই পুরুষ ভোগবাদী। তার জীবন সুখময়! নারীর কিছু থাকে না! প্রকৃতিতে নারীর ডিমান্ড অনেক হলেও, মনুষ্য সমাজে নেই। একটা গাছে ফল না ধরলে তা কেটে ফলে। একটা মুরগির ডিমান্ড অনেক। মেয়ে মানুষ ছাড়া নারীর অনেক ডিমান্ড প্রকৃতিতে। প্রকৃতি সুন্দর ফুল ও ফলে। সবই স্ত্রীর কাজ। সাজানো প্রকৃতি। যে মাছে ডিম থাকে তা পেলে মানুষ খুশি। কিন্তু নারী পোয়াতি হলেই সমস্যা! বিবাহিত হলে বৈধ না হলে অবৈধ। মনের কেন দাম নেই। ভালোবাসার মূল্য নেই। সবাই তেড়ে আসে ভালোবাসায়। অথচ সে কিন্তু ভালোবাসায় জড়ায়। পরনারীতে আসক্ত সে। তবুও স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। (চলবে,,,)
লেখক: কবি, কথাসাহিত্যিক ও গীতিকার