ছায়ানটের সন্জীদা খাতুন আর নেই

ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, রবীন্দ্র গবেষক এবং সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৩:১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সন্জীদা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পুত্রবধূ এবং ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা।
গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্যসঙ্কটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯২ বছর।
সন্জীদা খাতুনের জীবন এবং কর্ম:
সন্জীদা খাতুন ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক এবং মা সাজেদা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। তার পরিবার ছিল সংস্কৃতি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষকতা এবং সাংস্কৃতিক জীবন:
সন্জীদা খাতুনের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতা দিয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন এবং তার লেখাপড়া, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অনেকেই তার কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তার দক্ষতা এবং অধ্যাবসায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।
তিনি ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে অন্যতম এবং এ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে ছায়ানট বাংলাদেশে রবীন্দ্রসংগীত, বাঙালি সংস্কৃতি এবং সংগীতচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
এক বর্ণময় সাংস্কৃতিক জীবনের অবসান:
সন্জীদা খাতুনের মৃত্যু বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক বড় শূন্যতা তৈরি করেছে। তার অবদান বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির জন্য অমূল্য। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি যে অসাধারণ সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করেছিলেন, তা বহু বছর ধরে সংস্কৃতি প্রেমীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ এবং সংস্কৃতিক অঙ্গন গভীর শোকের মধ্যে ডুবেছে। তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে এবং তার অবদানকে স্মরণ করা হচ্ছে।
সবার দেশ/এমকেজে