Advertisement

হাসান জাকির


প্রকাশিত: ০১:০৬, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

বিষণ্ন বিকেল ও মায়ার গল্প  

বিষণ্ন বিকেল ও মায়ার গল্প  
ছবি: সবার দেশ

(১ম পর্ব)

বিকেলের উজ্জ্বল আলোচ্ছটা ফিকে হয়ে যাবার বেশ কিছু আগেই গ্রামটাতে পৌঁছে গেল ওরা। শেষবার যখন এসেছিল বাড়িটা খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল মৃদুলের। তবে এবার খুব একটা অসুবিধা হয়নি। সবুজ ফসলের মাঠের মাঝে সরু আলপথ ধরে হেঁটে চলছিল, আর ভাবছিল আমাদের এ দেশটা কত সুন্দর! পথের দু’ধারে রকমারি সবজির সমাহার, যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ। এ এক অন্যরকম মায়া।

গতকাল রাত থেকে তাঁর মুখচ্ছবিটা বারবার মৃদুলের চোখে ভাসছিল। মৃদুলের বাবা আফজাল সাহেব যখন তাকে পটুয়াখালীতে তাঁর একটা অফিশিয়াল কাজের কথা বলছিল, তখন দুইটা মুখ মৃদুলের চোখে ভেসে উঠেছিল। জীবনানন্দের পাখির নীড়ের মতো দু’টি চোখ আর মায়াবী মুখের সেই সুহাসিনীর মুখটা যেমন তাকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করছিল, তেমনি আরেকটি মলিন মুখচ্ছবি তাকে প্রবলভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল। সারারাত লঞ্চের বারান্দায় বসে ঘুরে ফিরে এ দু’টি মুখের ছবিই তার ভাবনার জগৎ জুড়ে ছিল। কেবিনের সামনের খোলা বারান্দায় রাতে লোকজনের আনাগোনা খুব একটা বেশি থাকে না। মৃদুল একা বসেছিল বারান্দায়। নদীর দিকে মুখ করে। সবসময়ই সে এমনটিই করে। মৃদুলের কাছে নৌপথে ভ্রমণের আনন্দটা এখানেই। এই বিস্তীর্ণ জলরাশির অন্যরকম এক মায়া আছে। বিশ বছরের মৃদুল আজও এই মায়া কাটাতে পারল না। সেই ছোটবেলা থেকেই লঞ্চে আসা-যাওয়া করে সে। দিগন্ত বিস্তৃত জলের মাঝে ঢেউ কেটে এগিয়ে যায় লঞ্চ। অন্ধকার রাত্রিতে সে এক রহস্যময় জগৎ, আর জোছনায় অন্যরকম এক ভালোলাগা। মৃদুল এই প্রেম কাটাতে পারে না। সেই ছেলেবেলায়ও পারেনি, আর মনে সামনের দিনগুলোতেও পারবে না।  

এক বছর আগের কথা- সবেমাত্র এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করেছে মৃদুল। হাতে অফুরন্ত অবসর। আর ক’দিন পর ভর্তি কোচিং এ ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে। তাই কোচিং এ ভর্তির আগে কিছুদিন বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই সুযোগে তার বাবা নিজের কিছু কাজ ছেলের কাঁধে চাপিয়ে দিলেন। বাবার সেই বিশেষ কাজে মৃদুলকে পটুয়াখালী আসতে হয়েছিল। কাজটা খুব জটিল কিছু নয়। বাবার অফিসের কিছু জরুরি ফাইল তাঁর এখানকার অফিস কলিগদেরকে বুঝিয়ে দেয়া। এবং সেইসাথে তাঁর এক পুরনো কলিগ ও বন্ধুর কাছে একটা প্যাকেট পৌঁছে দেয়া। মনে মনে মৃদুল ভাবছিল- এটা তো বাবা কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিতে পারতেন, তবে আমাকে কেন এ দায়িত্ব দিলেন। তখনই আফজাল সাহেব ছেলেকে বললেন, তোকে পাঠাচ্ছি দু’টো কারণে। প্রথমত এই ফাইলগুলোর বিষয়বস্তু তুই ওদের কাছে ক্লিয়ার করতে পারবি আর আকবরের এই জিনিসগুলো আমি কুরিয়ারে পাঠাতে চাচ্ছি না। নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া আমার বন্ধু আকবর তোকে দেখতে চাচ্ছিল। সেই দশ বছর আগে দেখেছে! তুই কাছাকাছি যাচ্ছিস শুনে তোকে পাঠিয়ে দিতে বলল।  

মৃদুল অনেক দিন পর পটুয়াখালী যাচ্ছে। একটা সময় বাবার চাকুরীর সুবাদে কয়েকটা বছর ওখানে কাটাতে হয়েছিল তাদের। ছোট্ট শহর, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, ছিমছাম। তখন ছিল, এখন চেহারা বদলে গেছে অনেকটাই। পটুয়াখালীতে তার ভালো লাগা স্মৃতি আছে অনেক, যেগুলো মনে পড়লে প্রায়শঃই সে নস্টালজিক হয়ে যায়। মনে আছে শহর ঘেঁষে দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট নদীটা, নামটা আর ঠিক মনে নেই কিন্তু ভাল লাগা রয়ে গেছে এখনও।  

পটুয়াখালী শহরে পৌঁছে বাবার পুরনো অফিসটা খুঁজে বের করল সে, কিন্তু অফিসে আকবর সাহেবকে পাওয়া গেল না। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেদিন অফিসে আসেননি। তবে তাঁর বাসা অফিস থেকে খুব বেশি দূরে নয়। শহরের এক প্রান্তে। ছোট্ট শহর, একটা রিকশা নিয়ে অফিস থেকে দেয়া ঠিকানামতো মৃদুল রওনা দিলো আকবর সাহেবের বাসার উদ্দেশ্যে। ঠিকানামতো আকবর সাহেবের বাসা পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি মৃদুলকে। কারণ, একসময় এই এলাকাতেই মৃদুলরা থাকত। যদিও এলাকাটির বর্তমান অবস্থা বদলে গেছে অনেক।

দরোজায় কয়েকবার কড়া নাড়ার পর ভেতর থেকে সাড়া পাওয়া গেল। দরোজা খুলল ষোল-সতের বছরের এক ষোড়শী। মেয়েটি মৃদুলের দিকে তাকিয়ে ছিল পলকহীনভাবে। মৃদুল দেখছিল প্রকৃতগত সারল্যমাখা মায়াবী কখানা মুখ নিবিড় অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে তাকে দেখছে। গভীর কালো দু'টি চোখে তার সাগর নীলের গভীরতা। ফর্সা গালের একপাশে ছোট্ট একটি তিল মেয়েটির সৌন্দর্য অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। মিনিটখানেক কেটে গেল, দু'জনের কেউ কোনো কথা বলছে না। 
মৃদুল লাজুক হাসি হাসল। তারপর জিজ্ঞেস করল, 
'এটা আকবর সাহেবের বাসা না?'  
মেয়েটি মুখে কিছু বলল না, কেবল মাথা নেড়ে সায় জানাল।
'উনি কি বাসায় আছেন? আমি ঢাকা থেকে এসেছি।'
মেয়েটি এবারও কিছু বলল না। তবে দরোজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে মৃদুলকে ভিতরে প্রবেশের জন্য পথ করে দিলো। মৃদুল ঘরে প্রবেশ করল। ঘরের এ-মাথা থেকে ও-মাথা পর্যন্ত লম্বা প্রসস্ত একটি বারান্দা। বারান্দার একপাশে একটি খাট পেতে রাখা আছে, অন্য পাশটায় কিছু কাঠের সোফা রাখা। মৃদুল তারই একটিতে বসল।  

মিনিট দশেক অপেক্ষা করার পরে ভদ্রলোক বারান্দায় প্রবেশ করল। চেহারায় বয়সের ছাপ পড়েছে বটে, তবে তাকে চিনতে খুব একটা সমস্যা হয়নি মৃদুলের। যদিও তখন অনেক ছোট ছিল সে, কিন্তু আকবর চাচাদের বাসায় অবাধ যাতায়াত ছিল- এটুকু স্পষ্ট মনে আছে তার। বিশেষ করে চাচি আর তাদের ছোট্ট মেয়ে মায়া। এখান থেকে চলে যাওয়ার পর এ দু’জনের কথা অনেকদিন মনে ছিল মৃদুলের। তারপর লেখাপড়ার চাপে একদিন তারাও বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল মন থেকে। 
‘তুমিই মৃদুল?’
আকবর সাহেবের প্রশ্ন শুনে সম্বিৎ ফিরে এল মৃদুলের। সে সপ্রতিভভাবে উত্তর দিলো,
‘জ্বি চাচা। আসসালামু আলাইকুম। আপনে ভালো আছেন?’
‘হ্যা, এমনিতে আছি ভালোই। তবে গতকাল রাতে হঠাৎ জ্বর এলো, তাই আজ আর অফিসে যাওয়া হয়নি। আফজাল কেমন আছে?’ 
‘বাবা ভালো আছে। বাবা আপনাকে দেয়ার জন্য একটা প্যাকেট দিয়েছে আমার কাছে। ওটা দিতেই আসা।’
‘হ্যা, আমার সাথে কথা হয়েছে আফজালের। ওগুলোতে কিছু ঔষধ আছে, তোমার চাচির জন্য।’
মৃদুলের মনে পড়ে গেল সেই ছোট্টবেলার কথা। মা আর এই চাচির মধ্যে চমৎকার একটি সম্পর্ক ছিল। ওদের বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে আকবর চাচাদের বাসায় যেমন আসত, তেমনি এ বাসা থেকেও ওদের বাসায় যেত। মৃদুলের ভাবনার মাঝেই মিসেস আকবর এসে দাঁড়াল স্বামীর পাশে। মৃদুলকে দেখে অবাক হয়ে বলল,
‘এই কি আমাদের সেই মৃদুল? ও মা! কত বড় হয়ে গেছ!’
মিসেস আকবরের বলার ধরণে হেসে ফেলল মৃদুল। ভদ্রমহিলার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইল সে। বয়স কিছুটা বাড়লেও তাঁর চেহারায় আগের সেই লাবন্য এখনও বজায় আছে পুরোপুরি।
মৃদুল কিছু বলার আগেই মিসেস আকবর বলল,
‘চাচিকে মনে আছে?’
মৃদুল কিছুটা ইতস্থত বোধ করছিল। শেষে মৃদু হেসে বলল, ‘আমি কিন্তু আপনাকে ঠিকই চিনতে পেরেছি।’
‘আমি তো ভেবেছি তুমি আমাকে চিনতেই পারবে না।’
‘চাচি, আপনার খুব একটা চেঞ্জ হয়নি। আপনার চেহারা আমার ঠিকই মনে আছে।’
‘আচ্ছা! চাচিকে খুশি করার জন্য বলছ না তো?’
‘একদম না। আচ্ছা চাচি, দরোজা খুলে দিলো যে মেয়েটা- ও কি মায়া?’
‘হ্যা। তুমি ওকে চিনতে পারোনি?’
‘না। সেই ছোট্টটি দেখেছিলাম। এখন তো অনেক বড় হয়ে গেছে।’
‘আচ্ছা আমি ওকে ডাকছি।’ 

মায়ার নাম ধরে কয়েকবার ডাক দিল মিসেস আকবর। একটু পরেই মায়া এসে দাঁড়াল মিসেস আকবরের পাশে। মৃদুলকে দেখিয়ে মা মেয়েকে বলল, ‘ওকে চিনতে পারিসনি? একসময় তোরা একজন আরেকজনকে ছাড়া তো থাকতেই পারতি না। খাবারও একসাথে খাইতিস।’
মায়ার চোখেমুখে প্রশ্ন। মৃদুলকে চিনতে পারেনি সে। মিসেস আকবর বলল, 
‘ও হচ্ছে মৃদুল। একসময় ওরা আর আমরা পাশাপাশি থাকতাম, ঐ দক্ষিণ পাড়ায়। তখন ওর বাবা আর তোর বাবা একই অফিসে চাকরি করত। দশ বছর আগে আফজাল ভাই ওদের নিয়ে ঢাকা চলে গেলেন। তাইতো তোদের আর দেখা হয়নি।’
মৃদুল বলে উঠল, ‘চাচি, ও তো তখন অনেক ছোট ছিল, তাই কিছু মনে নেই। আমি কিন্তু আপনাদেরকে ভুলিনি। মায়াকেও মনে ছিল আমার, তবে সেই আগের পিচ্চি মায়াকে। ও যে এতবড় হয়ে গেছে ভাবিইনি।’
মৃদুলের বলার ভঙ্গিতে আকবর সাহেব ও তাঁর স্ত্রী- দু’জনেই হেসে ফেলল। আকবর সাহেব হাসতে হাসতেই বলল, ‘তুমি নিজেও তো তখন ছোট ছিলে, এখন কত বড় হয়ে গেছ।’ 
‘হ্যা। এটাও সত্যি।’ সহাস্যে জবাব দিলো মৃদুল।
তিনজনের কথা বলার মধ্যে মায়া একটি বারের জন্য যোগ দেয়নি। ও কেবল শুনছে। কথা বলার ফাঁকেই মৃদুল মায়াকে কয়েকবার দেখেছে। মায়ার সাথে চোখাচোখিও হয়েছে দু’বার। মায়া নির্বিকারভাবেই তাকিয়ে ছিল তবে মৃদুলের চোখে মুগ্ধতার আবেশ ছিল, আর মায়ার সেটা বুঝতেও পেরেছে, তবে ধরা দেয়নি।
‘আচ্ছা চাচা, এইদিকে একটা নদী ছিল না?’ 
‘হ্যা, আছে তো এখনও। তবে ওটা এখন বদ্ধ জলাশয় মাত্র। বাঁধ দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে।’
‘মনে আছে বিকালে ঐ নদীটার পাড়ে ঘুরে বেড়াতাম, সবুজ ঘাসের মধ্যে মা আর চাচি বসে থাকত, আমি আর মায়া ছুটোছুটি করতাম। বাবা আর চাচা কতদিন জাল দিয়ে রাতে মাছ ধরেছে ঐ নদীতে! আমি কখনও ঐ নদীটার কথা ভুলিনি।’ বলতে বলতে মৃদুলের চোখ দু’টো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। 
‘আচ্ছা, তুমি এখন রেস্ট নাও। দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর মায়া তোমাকে নদীর পাড়ে নিয়ে যাবে।’ মিসেস আকবর বলল। 
‘চাচা, আমি তো এখন চলে যেতে চাচ্ছি। কলাতলায় আমার এক বন্ধুর বাড়ি। ওর ওখানে যাওয়ার কথা আছে।’
‘উহু! এসব চলবে না। আজ আর কোথাও যাওয়া হচ্ছে না তোমার। কাল বন্ধুর বাড়ি যেও। তোমার বাবার সাথে কথা হয়েছে তোমার চাচার। আজ তুমি আমাদের এখানেই থাকবে।’ মিসেস আকবর বলল। 
‘আকবর সাহেবের কাছ থেকে সরে গিয়ে মিসেস আকবর হয়ে মায়ার উপরে গিয়ে স্থির হলো মৃদুলের দৃষ্টি। দু’জনের চোখাচোখি হতেই মৃদুলের মনে হলো মায়ার চোখে আমন্ত্রণ। যদিও মুখে কিছু বলেনি সে। মৃদুল কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, 
‘আমার বন্ধু যে অপেক্ষা করবে চাচা?’ 
‘তাকে বলে দাও আগামিকাল যাবে তুমি।’ মিসেস আকবর আবার বলল।

মৃদুল আর কিছু বলল না। আকবর সাহেব ও মিসেস আকবরের পিছু পিছু মায়াও ভেতরে চলে গেলে মৃদুল একা হয়ে গেল। চোখে এখনও মায়ার সেই মায়াবী মুখখানা ভাসছে। মনে মনে সে ভাবছে, মায়া কি তাকে একেবারেই চিনতে পারেনি? একটি কথাও সে উচ্চারণ করল না। কিন্তু সে তো মায়ার মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। তার এই বিশ বছরের জীবনে কোনো মেয়ের প্রতি সেভাবে আকর্ষণ অনুভব করেনি, কিন্তু আজ কেন এমন হচ্ছে তার? সে কি তবে মায়ার প্রেমে পড়ে গেছে? মৃদুল একা একাই হাসছে। এত অল্প সময়েই প্রেম, সে কী করে হয়। মনে মনে হাসল কিছুক্ষণ তারপর নিজের মনেই আওড়াল, লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট বলে একটা কথা আছে না! তবে কি তার ক্ষেত্রে তেমনই হয়েছে? কিন্তু মায়াকে তো সে আজই প্রথম দেখেনি, ছেলেবেলায় বলতে গেলে একসাথেই বেড়ে উঠেছে। আবার ভাবছে- ছেলেবেলায় দেখা আর এই প্রথম যৌবনে দেখা কি এক! তাছাড়া মায়ার এই যে সৌন্দর্য- তার তুলনা কী? এর আগে এমন মেয়ে কি সে দেখেছে? মায়ার কি তাকে ভালো লেগেছে? তাকে দেখে তো কিছুই বোঝা গেল না। 

বিকেলের আলো কমে এসেছে। সবুজ ঘাসের উপরে বসে আছ মৃদুল আর মায়া। সামনে শান্ত জলরাশি। তারও ওপাশে সবুজের ছড়াছড়ি। মৃদুল একা একাই কথা বলছে, আর মায়া চুপচাপ শুনছে। মাঝে মধ্যে মৃদুলের টুকটাক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে কেবল। মৃদুল বলল, 
‘জানো, এই নদীটা আগে অনেক বড় ছিল, নদীতে তোমার বাবা আর আমার বাবা জাল দিয়ে মাছ ধরত, আর তুমি আর আমি ব্যাগ নিয়ে তাদের পিছু পিছু ছুটোছুটি করতাম। তোমার মনে আছে?’
‘নাহ! আমার তো কিছুই মনে পড়ছে না।’ (চলবে,,,)

হাসান জাকির 
পল্লবী, ঢাকা।