কবিতা
কবিতারা জেগে থাকে
ঠিক করেছি আজ আমি নগর দর্শনে যাবো– কবিয়ালদের আসরে,
শুনেছি নগরের রাজ-ফটকের কাছে কবিদের জলসা বসবে আজ,
রূপসী রাতের নির্ঘুম শহরে কবিতারা জেগে থাকে স্মৃতির পাখির মতো,
রাতের মৌন প্রহরে কবিতা গড়ে দেয় এক অমৃত সুখের বাসর,
বাইরে জোনাকির মিছিল, নক্ষত্রেরা মেতেছে- মাতাল রাতের উদোম শরীরে,
তখন সুখের পাণ্ডুলিপি নিয়ে কবিতারা ছুটে আসে শরতের জানালায়,
রচিত হয় রক্তজবার মতো যুগল প্রেমের এক সরলরৈখিক কাব্যপথ-
যে পথের শেষে- কবি ও কবিতা সাজায় মিলনের সকল আয়োজন,
ফেরারী বসন্তে যে পথিক পথে নেমেছিল জীবনের প্রাত্যহিকতায়-
সে বুঝে নেয় কী অদ্ভুতভাবে সংকোচের বেড়াজাল ভেঙে দিয়ে
বিসর্জনের মাঝে সুখ খোঁজা যায়- সুখচাষিদের অন্দরমহলে,
ভাদ্রের সাজঘরে কাঙ্ক্ষিত অনুক্ষণে রচিত হয় প্রেমের মহাকাব্য।
রাতের কাব্যোদ্যানে মুখরিত জনস্রোতে কবি ও কবিতার জয়যাত্রা
ইট-কঙ্করের পৃথিবীতে গড়ে দেয় মেঘ-বৃষ্টির নতুন সংসার,
মেঘের গতরেও কান্না জমে- বাতাসের বুকের উষ্ণতায়
নিষিদ্ধ সময়ের আবর্তে সে ভুলে যায় নিজ শরীরের আর্দ্রতা,
সুতীব্র আকর্ষণে মিশে যায় বাতাসের গায়- তীব্র দহন চিৎকারে,
ক্রমাগত ঝরে পড়ে সরল আবেগে, তুমুল স্রোতের মতো-
কবিতার লগ্ন আসে যখন মেঘেরা লুটিয়ে পড়ে মাটির দেয়ালে।
আবেগী রাতের মৌন প্রহরে নির্ঘুম কবিতারা জেগে থাকে,
রাতের বাতাসের সাক্ষী হয় নীলচে বেগুনি সব অর্কিড,
জানালার গ্রিলে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকে যে আঁখিযুগল-
তারাও বুঝে যায়- দহনের কাল কবিতার প্লাবনে হবে একাকার,
তখন হেমন্তের নীলাম্বরী রাত্রিতে কবিতার হলোগ্রাম চোখ-
অন্ধকারের আকাশ ফুঁড়ে ঢুকে যায় কুমারী সূর্যের শরীরে,
সৃষ্টি হয় কবি ও কবিতার ভালোবাসার এক যুগপৎ ইতিহাস।