গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট, ‘ওয়ান হাউস, ওয়ান মিডিয়া’
সাংবাদিকদের নবম গ্রেডে বেতন দেয়ার প্রস্তাব
গণমাধ্যমে কালো টাকা ঢুকেছে, রাজনৈতিক পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে মালিকানা দেয়া হয়েছে। বাস্তবে ৬০০ পত্রিকা সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার যোগ্য হলেও বিক্রিত পত্রিকা মাত্র ৫২টি। ফলে সরকারি বিজ্ঞাপনের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নবম গ্রেড অনুযায়ী বেতন কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। শনিবার (২২ মার্চ) কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের হাতে হস্তান্তরের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কমিশনের প্রধান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে কামাল আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় অনেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। যদিও ওয়েজবোর্ড নির্ধারণ করা আমাদের এখতিয়ারে নেই, তবুও ন্যূনতম নবম গ্রেড অনুযায়ী সাংবাদিকদের বেতন নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিসিএস ক্যাডারদের এন্ট্রি লেভেল অর্থাৎ নবম গ্রেডের বেতনের সঙ্গে মিল রেখে সাংবাদিকতার শুরুর বেতন নির্ধারণ করা উচিত। এ ছাড়া, রাজধানীতে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য 'ঢাকা ভাতা' চালুর প্রস্তাবও করা হয়েছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতে হলে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে এবং প্রথমে 'শিক্ষানবিশ সাংবাদিক' হিসেবে এক বছর কাজ করতে হবে। এরপর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অনুযায়ী পদোন্নতির ব্যবস্থা রাখা হবে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি ‘সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিশন, যার খসড়াও তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, গণমাধ্যমের মালিকানায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ওয়ান হাউস, ওয়ান মিডিয়া’ নীতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কেবল একটি গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবেন।
কামাল আহমেদ অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমে কালো টাকা ঢুকেছে, রাজনৈতিক পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে মালিকানা দেয়া হয়েছে। বাস্তবে ৬০০ পত্রিকা সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার যোগ্য হলেও বিক্রিত পত্রিকা মাত্র ৫২টি। ফলে সরকারি বিজ্ঞাপনের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করে 'জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা' গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য ৭ দফা সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিস্তারিত সুপারিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের গণমাধ্যম আরও স্বচ্ছ, স্বাধীন ও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
সবার দেশ/কেএম