গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট
অনলাইন পোর্টালে বুলেটিন সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞা বাতিলের প্রস্তাব
অনলাইন পোর্টালগুলোর নিয়ন্ত্রণহীন প্রসারের ফলে হলুদ সাংবাদিকতা, অনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং, নাগরিক হয়রানি এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটছে। এ কারণে একটি কার্যকরী শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য এ সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করছে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন অনলাইন পোর্টাল এবং আইপিটিভি-তে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ এবং অন্যান্য সদস্যরা তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন।
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে অনলাইন পোর্টাল সম্পর্কিত সাতটি সুপারিশ করেছে, যা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
৭ দফা সুপারিশগুলো:
১. নতুন নিবন্ধন নীতিমালা প্রণয়ন
অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের নীতিমালা হালনাগাদ করে এটি স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের অধীনে পরিচালনা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
২. নিবন্ধন পর্যালোচনা
গত দশকে যেসব অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধিত হয়েছে, সেগুলোর পর্যালোচনা করা উচিত, কারণ সেগুলো স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতির অধীনে নিবন্ধিত হয়নি।
৩. নিরাপত্তা সংস্থার তদন্ত ব্যবস্থা বাতিল
একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার তদন্ত ব্যবস্থা বাতিল করে সংবাদপত্রের ডিক্লারেশনের জন্য পুলিশের বর্তমান তদন্তব্যবস্থা যথেষ্ট বলে মনে করা হয়েছে।
৪. বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল
অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা উচিত।
৫. সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞা বাতিল
অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে।
৬. সরকারি বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা
অনলাইন পোর্টালগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতার মাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
৭. ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো
অনলাইন পোর্টালের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এটি সংবাদমাধ্যমগুলিকে নিরুৎসাহিত করছে, তাই এ ফি কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশন উল্লেখ করেছে, অনলাইন পোর্টালগুলোর নিয়ন্ত্রণহীন প্রসারের ফলে হলুদ সাংবাদিকতা, অনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং, নাগরিক হয়রানি এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটছে। এ কারণে একটি কার্যকরী শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য এ সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করছে।
এ পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে গণমাধ্যমের মধ্যে আরও স্বচ্ছতা এবং সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং সাংবাদিকতা আরও সুরক্ষিত হবে, এমনটাই আশা প্রকাশ করছে কমিশন।
সবার দেশ/কেএম