Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

বিটিভিতে লাগেনি পরিবর্তনের হাওয়া 

বিটিভিতে লাগেনি পরিবর্তনের হাওয়া 
ফাইল ছবি

একটা সময় বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল ড্রইংরুমের দর্শকদের জন্য তথ্য, সংবাদ ও বিনোদনের অন্যতম নির্ভরতার জায়গা। বিটিভি নামে পরিচিত দেশের একমাত্র-এ চ্যানেলটিতে মানসম্পন্ন নাটক, ম্যাগাজিন ও শিশুতোষ অনুষ্ঠান, হিরামন, বিদেশি সিরিয়ালসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য সপ্তাহভর অপেক্ষা করতেন দর্শক। 

কিন্তু সময়ের বিবর্তনে বদলেছে বিটিভি’র চরিত্র। অনুষ্ঠান বাড়লেও মান কেবল কমছেই। চ্যানেলটির প্রসঙ্গ উঠলে অনেকেই ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘বাতাবিলেবুর বাম্পার ফলন’। পাশাপাশি চ্যানেলটি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়সম অভিযোগ জমা হয়েছে। বিশেষ করে গত সরকারের শেষদিকে বিটিভি’র অবস্থা ছিল নড়বড়ে, নাজুক ও একতরফা। 

সেময় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয় প্রতিষ্ঠানটি। অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ ওঠে বিটিভি’র সাবেক জিএম মাহফুজা আক্তারসহ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বর্তমানে অভিযুক্ত মুখগুলোর বদল হলেও বিটিভি’র চরিত্র কিংবা অনুষ্ঠানে কিন্তু তেমন পরিবর্তন চোখে পড়েনি। 

ধারণা করা হয়েছিলো, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর চরিত্র বদলে বিটিভি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, তোষামদবিহীন নির্মল অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের জমানায় যারা বিশেষ করে সংবাদ পাঠ করতেন তারা এখনও বহাল। আর যাদের ওই সরকার বিনা নোটিশে খবর পড়া থেকে বিরত রেখেছিলো তাদের কাউকে এখন পর্যন্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এমনকি এখনও অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্প্রচারে দেখা মিলছে পুরোনো সে সরকার তোষণনীতি। ঘটনার চেয়েও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে ব্যক্তিকে। 

এদিকে বিটিভি’র দর্শক সংখ্যা সেভাবে নিরূপণ করা না গেলেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের অনুষ্ঠান এখন প্রকাশ করছে ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবেও। সেখানেও চ্যানেলটির  অবস্থা নাজুক। গত কয়েকদিনের অনুষ্ঠান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ অনুষ্ঠানের দর্শকসংখ্যা খুবই কম। অনেক অনুষ্ঠান ও সংবাদের ভিউ ইউটিউবে একশ’ থেকে পাঁচশ’র ঘরে থমকে আছে। 

বিটিভি’র অনুষ্ঠান সম্প্রচার সকাল ৭টায় শুরু হয়ে শেষ হয় রাত সাড়ে ১২টার দিকে। দিনে ৯টি সংবাদ বুলেটিনসহ প্রতিদিন গড়ে ৪৮ থেকে ৫০টি অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়। এরমধ্যে ৮ থেকে ১০টি ‘ফিলার’ প্রচারিত হয়, যার অধিকাংশ থাকে সরকারের কার্যক্রম, জনসচেতনতা ও ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে। 

চ্যানেলটির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য বার্তা সম্পাদক মুন্সী মো. ফরিদুজ্জামানের সঙ্গে। বলা হচ্ছে, বিটিভি’র কর্মকর্তা বদলেছে, চরিত্র বদলায়নি। এ বিষয়টির সঙ্গে আপনি একমত? উত্তরে বিটিভি’র এ কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে একমত নই। কারণ অনেক দিক থেকেই আমরা চেষ্টা করছি পরিবর্তনের। কিছু পরিবর্তন হয়েছেও। 

তিনি বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। লজিস্টিক সাপোর্টের ঘাটতি রয়েছে। গাড়ি, ক্যামেরা থেকে শুরু করে সবকিছুরই ঘাটতি রয়েছে। রিপোর্টারের সংখ্যা কম। আমরা চেষ্টা করছি সর্বাত্মক। কিছু লোকবল পরিবর্তন হয়েছে এরমধ্যে। তবে আগে যেমন চাপ ছিলো, সেটা এখন নেই। আগে নির্দেশনা দেয়া ছিলো- প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, তথ্যমন্ত্রীসহ বেশক’জন সংবাদের ক্ষেত্রে আগে গুরুত্ব পাবে। যত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই ঘটুক এগুলো আগে কাভার করতে হবে। এখন সেটা নেই। 

এ কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের জুলাই নাগাদ আমরা বিটিভিতে একটা বড় পরিবর্তন আনতে পারবো বলে আশা রাখি। যেহেতু রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন, তাই টেন্ডারের মাধ্যমে লজিস্টিক সাপোর্টগুলো পাওয়াটা সময় সাপেক্ষ। লোকবলও নিয়োগ দেয়া হবে। তারপর একটা আমূল পরিবর্তন হয়তো সবার চোখে পড়বে।

সবার দেশ/কেএম

সম্পর্কিত বিষয়: