Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:১৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ০১:৩৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বৈঠক

ব্যাংক ডাকাতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

ব্যাংক ডাকাতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ
ফাইল ছবি

দেশের অর্থনীতি খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অর্থনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সূচকে স্পষ্টভাবে তা প্রতীয়মান হচ্ছে। গত পাঁচ মাসে রপ্তানি ১০ শতাংশ বেড়েছে। বেড়েছে আমদানিও। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১২ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে গত ছয় মাসে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। শফিকুল আলম বলেন, খাদ্য শস্যের দাম কমবে। আন্তর্জাতিকভাবে খাদ্য শস্যের দাম কমছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। 

সরকার সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার চালু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য যাত্রা শুরু করছে কমান্ড সেন্টার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ কমান্ড সেন্টারটি পরিচালিত হবে। সেন্টারটির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী-পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড, আরমডফোর্স ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যুক্ত থাকবেন। 

তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের কোথাও আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে কমান্ড সেন্টার থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে বিভিন্ন বাহিনীর কার্যক্রমে সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা একটি কমান্ড সেন্টার স্থাপনের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশনায় গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে যাত্রা শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। 

অন্যদিকে বাংলাদেশে কোরিয়ান ইপিজেড নির্মাণের জন্য জমিসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, তাদের হাতে জমির কাগজপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। ফলে কোরিয়ান ব্যাপক বিনিয়োগ আসবে দেশে। পতিত সরকার কোরিয়ান ইপিজেডের জমি দখল করার পাঁয়তারা করছিলো বলে বাংলাদেশের পরিবর্তে ভিয়েতনামে তাদের প্রচুর বিনিয়োগ চলে যায়। এখন সব সংকট সমাধান হয়েছে।  আমরা আশা করি কোরিয়ান ইপিজেডে বড় বড় কোম্পানিগুলো আসবে। তাতে আমাদের দেশে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কারণে বাংলাদেশের পরিবর্তে ভিয়েতনামে প্রচুর বিনিয়োগ চলে যায়। এখন সব সংকট সমাধান হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, যারা যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, যারা যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে। যে কোনভাবে হোক তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা এ কাজ করেছেন তারা মূলত বাংলাদেশের মানুষের টাকা মেরে দিয়েছেন। তাদের যে করে হোক আইনের আওতায় আনতে হবে। 

মিটিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, এস আলমের বাংলাদেশে যত অ্যাসেট আছে সব অ্যাটাচ করা হয়েছে। নগদের বিরুদ্ধেও কিছু অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। দেশের বাইরে যেসব সম্পদ চলে গেছে সেগুলোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। 

তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের একটা টিম বাংলাদেশে এসে ঘুরে গেছে। এখন সুইজারল্যান্ডের একটা টিম বাংলাদেশের এসেছে। আমরা ইউএসের সঙ্গে কথা বলছি, কানাডার সঙ্গে কথা বলছি। বাংলাদেশ থেকে যে টাকাটা চলে গেছে যে করে হোক, সেটা কীভাবে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। তিনি বলেছেন, ১২ জন যারা ব্যাংকিং সিস্টেমের লুটপাটে জড়িত, বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে, এদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এরা কীভাবে টাকা নিয়েছে সেটা আমরা দেখছি। 

সবার দেশে/এমকেজে