Advertisement

সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২২:২০, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিডিআর হত্যাকান্ড তদন্তে কমিশন

যে কোনও সময় গ্রেফতার দুদক কমিশনার জহিরুল

যে কোনও সময় গ্রেফতার দুদক কমিশনার জহিরুল
ছবি: সবার দেশ

হাসিনা অনুগত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) ও সাবেক জেলা জজ মো: জহিরুল হকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে তার পাসপোর্টও। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। জানাগেছে, বিডিআর পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ লক্ষ্যে  যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার করা হতে পারে তাকে।  

এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর দুদক কমিশনার জহুররুল হক ‘ব্যক্তিগত’ কারণ  দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। একই সময়ে নিজেদের পদ  থেকে পদত্যাগ করেন সংস্থাটির  চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মইনুউদ্দীন আব্দুল্লাহ ও অপর কমিশনার আছিয়া খাতুন। 

পিলখানা হত্যার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশন সূত্র জানায়, হাসিনার অনুগত বিচারক মো: জহিরুল হক ছিলেন পিলখানা হত্যা মামলার প্রথম বিচারক। তিনি মামলাটির চার্জ গঠন করেন। এ কারণে তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। এ বিচারক যাতে কোনো ক্রমে দেশত্যাগ করতে না পারেন তাই এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এর আগে বিডিআর’র সাবেক মহাপরিচালক মইনুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  

সূত্রটি আরো জানায়, ৮৩ ব্যাচের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা জহিরুল হক বিডিআর পিলখানা হত্যা মামলার প্রথম বিচারক ছিলেন। তিনি পিলখানার বহু কিছুর সাক্ষী। তাই পিলখানা হত্যার ঘটনা তদন্তে যে কমিশন প্রতিষ্ঠা হয়েছে সে কমিশনের নির্দেশে তার দেশত্যাগ সবপথ বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে দুদকেও শুরু হয়েছে অনুসন্ধান। 

তার দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে তার দুর্নীতির কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বিচারক থাকাকালেই তার বিরুদ্ধে ব্যপক দুর্নীতির অভিযোগ ছিলো। বিডিআর পিলখানা হত্যা মামলার শুরুর দিকে তিনি বহু অভিযুক্তকে অর্থের বিনিময়ে ছাড় দিয়েছেন । আওয়ামী আমলেই তিনি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে রায়  কেনা  বেচা, অর্থের বিনিময়ে জামিন প্রদানের কানাঘুষা ছিলো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মুখে মুখে। তার দুর্নীতির বিষয়টি ছিলো ওপেন সিক্রেট। এছাড়া দুদক দায়েরকৃত অনেক দুর্নীতি মামলায় তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জামিন প্রদান, তাদের পক্ষে রায় দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়েছেন-মর্মে অভিযোগ রয়েছে। ভুল বিচার ও অন্যায় আদেশ প্রদানের কারণে তাকে একাধিক বার হাইকোর্ট তাকে তলব করেন।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ থাকাকালে তার হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ লাভের সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু ব্যাপক দুর্নীতির কারণে তাকে হাইকোর্টে  নেয়া হয়নি। পরে তাকে বিটিআরসি’র সদস্য হিসেবে পুনর্বাসন করা হয়। পরে কিছু দিনের জন্য  চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। এ সময় তার সঙ্গে  যোগাযোগ হয়  শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের।  সে সময় আওয়ামীলীগ  নেতা মির্জা আজমের মাধ্যমে জয়ের কাছে সুপারিশ যায় জহুরুল হককে দুদক কমিশনার করার। সে তদবিরে জহিরুল হককে দুদকে পুনর্বাসন করা হয়। 

দুদকে দায়িত্ব পেয়েই তার অর্থ লিপ্সা আরো বেড়ে যায়। বহু  ব্যাংক লুটেরা ও দুর্নীতিবাজকে তিনি চার্জশিট পর্যায়ে দায়মুক্তি দেন । বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। এছাড়া  বেনামে ক্লিনিক ব্যবসার (এএমজেড হাসপাতাল) করছেন-মর্মেও অভিযোগ রয়েছে। পূর্বাচলে ১০ কাঠা প্লটের ওপর একটি বহু তল ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে তার মালিকানায়। 

সবার দেশ/এওয়াই