Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:৩১, ১৬ মার্চ ২০২৫

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রায়

মিছিল-সমাবেশে বল প্রয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের ৭ দফা নির্দেশনা

মিছিল-সমাবেশে বল প্রয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের ৭ দফা নির্দেশনা
ফাইল ছবি

শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো শুধুমাত্র কঠোর প্রয়োজনেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে বল প্রয়োগ করতে পারবে বলে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ রায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাতটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ এ রায় দেন।

হাইকোর্টের সাত দফা নির্দেশনা:
১. বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।
২. মানুষের জীবন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের জীবন ও মর্যাদাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।
৩. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো শুধুমাত্র কঠোর প্রয়োজনেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে বল প্রয়োগ করতে পারবে।
৪. দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানুষের মর্যাদা রক্ষা করবে এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখবে।
৫. শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিক সমানভাবে উপভোগ করবে এবং বৈষম্যহীনভাবে তা কার্যকর হবে।
৬. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে তারা দায়বদ্ধ থাকবে।
৭. বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা বা জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের পরিস্থিতিতে সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পুলিশের গুলি ব্যবহারের নির্দেশনা:
হাইকোর্ট আরও পর্যবেক্ষণ দেন, কেউ আইন লঙ্ঘন করলে পুলিশ প্রথমে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহার করতে পারে। তবে কোনো আইন লঙ্ঘন বা দাঙ্গা না হলে তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না।

রিটের পটভূমি ও শুনানি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ওপর তাজা গুলি চালানো বন্ধ এবং ছয় ছাত্র সমন্বয়কের মুক্তির দাবিতে ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই রিটটি দায়ের করা হয়। এতে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, তবারক হোসেন, জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হকসহ অন্যান্য আইনজীবীরা। সরকারপক্ষে অংশ নেন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীরসহ অন্যান্যরা।

হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ও সংবিধানের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

সবার দেশ/কেএম