Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৩:০৫, ২৭ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ০৩:০৬, ২৭ মার্চ ২০২৫

চীন সফরে ড. ইউনূস

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের এ সফর বাংলাদেশের ভবিষ্যত সরকারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ নিয়ে আসবে। চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের দুয়ার খুলে দেবে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বি

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল চীন পৌঁছেছেন। এ সফর বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

সফরের লক্ষ্যে চীন এবং বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সফরের সময় ছয় থেকে আটটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে এক থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণাও আসতে পারে।

বাংলাদেশের চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন, যেখানে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ চীন থেকে ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর পাশাপাশি, চীন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ড. ইউনূসের এ সফর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে আরও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

ড. ইউনূসের চীন সফরকে কেন্দ্র করে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু কূটনৈতিক অপচেষ্টা ছিলো, কারণ ভারত চায় না যে, চীন এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক। বিশেষ করে তিস্তা প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে ভারতের আগ্রহ এবং চীনের involvement নিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। ভারত চায় যে, বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পের দায়িত্ব ভারতের হাতে আসুক, এবং চীন যেন এতে কোনও ভূমিকা না নেয়।

চীন, বিশেষত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, জানিয়েছে যে, চীন তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দিতে প্রস্তুত, তবে এর বাস্তবায়ন বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের এ আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ সফরে, ড. ইউনূস বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠক করবেন, যা বর্তমান এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে চীনের সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, তিনি হুয়াওয়ে’র একটি উচ্চ প্রযুক্তির উদ্যোগ পরিদর্শন করবেন এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করবেন।

এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিছু ছোট প্রকল্পে সহায়তা, বাজেট সহায়তা, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সহযোগিতা, এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি হওয়ার আশা করা হচ্ছে। যদিও বড় প্রকল্পের জন্য চীনের থেকে অর্থায়ন প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না, তবে ছোট প্রকল্পগুলোতে চীনের সহায়তা চলমান থাকতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের এ সফর বাংলাদেশের ভবিষ্যত সরকারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ নিয়ে আসবে। চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের দুয়ার খুলে দেবে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।

ড. ইউনূসের এ সফর দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাণিজ্যিক, আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সুযোগ তৈরি হবে, যা আগামীতে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সবার দেশ/এমকেজে