গৃহযুদ্ধ-সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র
শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্র ও বর্তমান সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, 'জয় বাংলা ব্রিগেড' নামক একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মিটিংয়ের মাধ্যমে গোপনে গৃহযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামক একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে শতাধিক বাংলাদেশি ও প্রবাসী নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। ওই মিটিংয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী লুটেরা হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার জন্য গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার বিষয়টি আলোচিত হয়। এ পরিকল্পনা অনুসারে, অংশগ্রহণকারীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ফের গৃহযুদ্ধ শুরু করার অঙ্গীকার করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, 'জয় বাংলা ব্রিগেড' প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও গৃহযুদ্ধের আহ্বান করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। মামলা দায়েরের পর সিআইডি এ মামলার তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া, মামলায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমকেও দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে। ড. রাব্বি আলম মিটিংয়ের হোস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে এ ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গোপন গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং বৈধ সরকারের কাজকর্মে বাধা দেয়ার অঙ্গীকার করেন। সিআইডিকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এবং তাদের কাজ হচ্ছে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নির্ধারণ করা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীরা সরকার উৎখাতের জন্য গৃহযুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং বিশেষভাবে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে তারা একত্রিত হয়েছেন। এসব কথোপকথনের মধ্যে এমন কোনো বক্তব্য পাওয়া গেছে, যা রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের দিক নির্দেশ করে। এছাড়া, মিটিংয়ে বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে, যা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য গুরুতর হুমকি হতে পারে।
মামলার প্রেক্ষিতে, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এ অভিযোগ গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দায়ের হওয়া এ মামলার তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য সিআইডি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও সিআইডির প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সবার দেশ/কেএম